ফের বিতর্কে বিজেপি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস সরকার পড়ে গিয়েছে। সফল বিজেপির ছক। এবার কি তাদের লক্ষ্য বাংলা? তেমনই ইঙ্গিত মিলল অমিত শাহের কথায়। জানালেন বাংলায় শীঘ্রই তৃণমূল সরকারের পতন হবে, বাংলার মসনদে বসবে বিজেপি। যা ঘিরেই শুরু হয়েছে শোরগোল। রবিবার মহারাষ্ট্রের কায়দায় বাংলা দখলের হুমকি দিলেন মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হায়দ্রাবাদে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিনে, রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করার সময় হুঁশিয়ারি দিলেন শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। প্রসঙ্গত, এর জবাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিজেপি যতই চেষ্টা করুক না কেন, বাংলার মানুষ বিজেপির সব চক্রান্ত ব্যর্থ করবেন। সূত্রের খবর, জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিনে অমিত শাহ সুর চড়িয়ে বলেন, তেলেঙ্গানা ও বাংলায় পরিবারতন্ত্র চলছে। শীঘ্রই পরিবারতন্ত্রের পতন হবে। সেখানে বিজেপি সরকার গড়বে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, উড়িষ্যাতেও সরকার গড়বে বিজেপি। সাম্প্রতিক সময়ে মুম্বাইতে যেভাবে সরকার ফেলে দেওয়া হল, তার পরিপ্রেক্ষিতে শাহের এহেন মন্তব্যকে হুঁশিয়ারি রূপেই দেখছে রাজনৈতিক বিষেশজ্ঞ মহল। জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে হাজির হওয়া বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে উজ্জীবিত করতেই কি এমন হুঁশিয়ারি দিলেন শাহ? উঠছে প্রশ্ন।
যদিও এসবে তিলমাত্র চিন্তিত হয় ঘাসফুল শিবির। তৃণমূলের সাফ কথা, বিজেপির এসব কথা কোন লাভ হবে না। বাংলায় ২০০ পারের স্লোগান দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বাংলার মানুষ বিজেপিকে জবাব দিয়েছে। বাংলায় বিজেপি যে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে মোটেই শুভ নয়। বিজেপির সব চেষ্টা, মানুষই ব্যর্থ করবেন। শনিবার জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের প্রথম দিনে, বাংলায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন বিজেপি সভাপতি নাড্ডা। সমাপ্তি ভাষণেও প্রধানমন্ত্রীর গলায় একই সুর শোনা গিয়েছে। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, মোদী বলেছেন, তেলেঙ্গানা, কেরল এবং বাংলায় যেভাবে রাজনৈতিক অত্যাচার সহ্য করেও বিজেপির কর্মীরা কাজ করে চলেছেন, তার জন্য তিনি গর্বিত। এরপরেই পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি এবং পরিবারতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের স্থায়িত্ব বেশিদিনের নয় বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোদী। অন্যদিকে বাংলাকে অপমান না করে, মোদীকে রাজ্যের বকেয়া অর্থ মেটানোর নিদান দিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরিবারতন্ত্র প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের অমিত শাহকে নিজের দিকে দেখার কথা বলেছেন। তিনি কীভাবে নিজের ছেলেকে ক্রিকেটের উচ্চপদে নিয়ে এসেছেন, সে প্রশ্নও তোলেন সৌগত। বৈঠকের মাঝেই নাড্ডা পৃথকভাবে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন বলেও খবর মিলেছে। যদিও বিজেপি তরফে তা স্বীকার করা হয়নি। সোমবার ৪ জুলাই হায়দ্রাবাদে বিজেপির সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের আলাদা একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।