অব্যাহত মোদী সরকারের দুয়োরানিসুলভ আচরণ। তবুও সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে সারা দেশে এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নিরিখে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বাংলা। মোদী সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ঋণের মাধ্যমে কাজের পরিসর বাড়াতে বাংলার মোট যত সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে, তার ধারে কাছেও নেই বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি। কেবল ঋণ গ্রহণ নয়, ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও অন্য ডবল ইঞ্জিন রাজ্যের থেকে এগিয়ে বাংলার।।অন্যদিকে, জাতীয় গড়ের থেকে তুলনায় রাজ্যে ঋণ খেলাপের ঘটনাও অনেক কম। মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ‘জাতীয় গ্রামীণ জীবন জীবিকা মিশন’-এর তথ্য বলছে, রাজ্যে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৬৮ হাজার ৭৬৪টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাতের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি এই একই অর্থবছরে যথাক্রমে ১ হাজার ৬১৯ ও ১ হাজার ৫৭৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় স্তরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রে এনপিএর হার ২ শতাংশ। প্রসঙ্গত, কিছু মাসের জন্য সুদের টাকা না দিলে তাকে এনপিএ হিসেবে ধরা হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে এ রাজ্যে এনপিএর হার মাত্র ১.৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে, বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশে ও গুজরাতে এনপিএর হার হল যথাক্রমে ১৭.৭৬ % এবং ৬.০৬ %। ঋণ পাওয়ার জন্যে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণে রাজ্য সরকারগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড, আর্টিসান ক্রেডিট কার্ড, ইত্যাদি কার্ডের মাধ্যমে সাহায্য পেতে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে রাজ্য সরকারকে সমন্বয়সাধনের কাজ করতে হয়। অনুরূপভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা নিতে হয় রাজ্যের। নবান্ন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সে কাজ সেরেছে, ফলে চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসেই সুফল মিলেছে। পাশাপাশি রাজ্যের অনুমান, দুর্গাপুজোর পরে এই সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি পাবে। উল্লেখ্য, ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল রাজ্য। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেয়েছিল বাংলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। চলতি বছর এখনও সেই লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করা না হলেও, রাজ্যের লক্ষ্য যে ১৬ হাজার কোটি টাকার কম হবে না, তা নিশ্চিত করে বলাই যায়। এমনই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।