কয়েকদিন আগেই ঘটে গিয়েছে জাহাঙ্গিরপুরীর কাণ্ড। সেই স্মৃতি এখনও তাজা দিল্লীবাসীদের মনে। তার মধ্যেই, সোমবার দক্ষিণ দিল্লী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বুলডোজার পাঠানো হয়েছে দিল্লীর শাহীনবাগে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী। এদিন শাহিনবাগের বেআইনি নির্মাণ গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযানে নেমেছে দক্ষিণ দিল্লী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। মূলত শাহিনবাগের জি ব্লকে জসলা নালে থেকে কালিন্দি কুঞ্জ পর্যন্ত এই অভিযান চালাবে রাজধানীর পুরসভাটি।
স্বাভাবিকভাবেই এই অভিযান নিয়ে উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিল্লী কর্পোরেশন বিজেপিশাসিত। গত ২০শে এপ্রিল দিল্লী বিজেপির সভাপতি অধেশ কাপুর দুই মেয়রকে চিঠি দিয়ে লিখেছিলেন, বেআইনি ঝুপড়িগুলিতে বাংলাদেশি, রোহিঙ্গাতে ছেয়ে যাচ্ছে শহর। দ্রুত পদক্ষেপ করুক কর্পোরেশন। তারপর থেকেই অভিযান শুরু করে দিল্লীর কর্পোরেশনগুলি। তারপরই জাহাঙ্গিরপুরীতে অভিযানে নেমেছিল উত্তর দিল্লী পুরসভা। র শাহিনবাগে বেআইনি দখল-বিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হল এলাকায়। দক্ষিণ দিল্লি পুর নিগমের (এসডিএমসি) পক্ষ থেকে সোমবার সকালে এই দখল-বিরোধী অভিযান শুরু হয়। কিন্তু অভিযান শুরু করতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েন নিগমের কর্মীরা। এই শাহিনবাগেই এক বছর আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতায় রাস্তা জুড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে এসডিএমসি এই দখল বিরোধী অভিযান শুরু করে রীতিমতো প্রস্তুতি নিয়েই। আনা হয় বুলডোজার এবং জেসিবি। এ ছাড়া মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে সকাল থেকে হাজির হন কংগ্রেস কর্মীরাও। অভিযান শুরু করতেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বুলডোজারকে ঘিরে ধরে রাখেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা বেআইনি ভাবে সরকারি জমি দখল করেননি। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় আন্দোলনকারীদের। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় কয়েকটি নির্মাণ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ঠা মে তুঘলকাবাদের করণী শ্যুটিং রেঞ্জে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু দোকানঘর ও ঝুপড়ি ভেঙেছিল পুরসভা। এবার অভিযান শাহিনবাগে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগ হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের মূলকেন্দ্র। ২০১৯-এর মাঝামাঝি সময় থেকে ২০২০ সালে কোভিড সংক্রমণ শুরুর আগে পর্যন্ত এই এলাকা ছিল তপ্ত। গোষ্ঠী হিংসাতেও উত্তপ্ত হয়েছিল শাহিনবাগ। এদিন সেখানেই উচ্ছেদ অভিযানে নামল দক্ষিণ দিল্লী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। দিল্লি পুলিশের তরিফে বলা হয়েছে, তারা সমস্ত রকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।