বাংলাজুড়ে বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মাধ্যমেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমান জোর দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানান ধরনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। অনেক ক্ষেত্রেই সেই এলাকার যুবক-যুবতীরা এই কাজে যুক্ত হয়ে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তবে এতদিন পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে তাঁদের অনেকেই হাল ছেড়ে উপার্জনের অন্য পথ খুঁজে নিতেন। এবার এই সমস্যার সমাধানে জোর কদমে নেমে পড়েছে রাজ্য। জেলায় জেলায় বেকার যুবকদের নিয়ে গড়া ‘গ্রামীণ এন্টারপ্রেনারশিপ হাব’-এর সংখ্যা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এর ফলে বেকার যুবকরা যেমন বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে উপার্জনের মুখ দেখবেন, তেমনি অন্যদিকে, এঁদের এন্টারপ্রেনারশিপ হাবেই চাকরি হবে এলাকার অন্যান্য যুবক-যুবতীর।
সূত্র অনুযায়ী, মুলত বেকার যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন ব্যবসায় উৎসাহ বাড়াতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্রশিল্প দফতরের অধীন প্রকল্প গ্রহণ করে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে আরইএইচ তৈরির কাজ শুরু করে রাজ্য। কোভিডের কারণে বিগত দু’বছরে এই প্রকল্পের আশানুরূপ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিগত চারটি অর্থবর্ষে মোট ২৪০টি আরইএইচ স্থাপন করা হয়েছে। যার অধিকাংশই স্থাপিত হয়েছিল ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষের দিকে গিয়ে ৮২টির মতো আরইএইচ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে খবর, এবার ফের একবার জেলায় জেলায় এই ধরনের হাব স্থাপন করার লক্ষ্যে ফের একবার কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য। চলতি অর্থবর্ষেই চালু করা হবে আরও অন্তত ২৫০টি এরকম হাব। যার ফলে মোট ৫০০টি আরইএইচ চালু করার নজিরও গড়ে ফেলবে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, এই হাবের সদস্যদের (সদ্য নিযুক্ত বেকার যুবক-যুবতীদের) মিলিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
প্রসঙ্গত, প্রতিটি আরইএইচ-কে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি কিনে দেয় রাজ্য। অন্তত ১০ জন বেকার যুবক-যুবতীকে নিয়ে একটি আরইএইচ গঠন করা হয়। তবে বর্তমানে যে ২৪০টি আরইএইচ আছে, তার এক একটিতে ২০ থেকে আরম্ভ করে ৬০ জন পর্যন্তও সদস্য রয়েছে। অতএব, রাজ্যের আধিকারিকদের হিসাব অনুযায়ী নতুন আরইএইচগুলির এক একটিতে এই সংখ্যক সদস্য হলে শুধুমাত্র ব্যবসার কাজে যুক্ত হয়ে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে পাবেন অন্তত ছ’হাজার বেকার যুবক-যুবতী। এর পাশাপাশি এই নতুন হাবগুলির এক একটিতে চাকরি পাবেন আরও ১০ থেকে ২০ জন করে। সেই নিরিখে কাজ পাবেন আরও চার হাজার মানুষ।