অব্যাহত বিলগ্নীকরণ। এলআইসির শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে যাচ্ছে এ মাসের মধ্যেই। সরকারি বিমা সংস্থার এই মসৃণ বিলগ্নীকরণ দেখে উৎসাহী মোদী সরকার। জীবনবিমার পর এবার সাধারণ বিমা সংস্থার বিলগ্নীকরণেও ঝাঁপাচ্ছে অর্থমন্ত্রক। একটি ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থার বেসরকারিকরণ করা হবে বলে নীতি আয়োগের অনুমোদন আগেই মিলেছে। গত আর্থিক বছরে বেসরকারিকরণের বিপুল টার্গেট ধার্য হলেও লাভ বিশেষ হয়নি। সেই কারণে তাবৎ বকেয়া বিলগ্নীকরণের কাজ ২০২২-২৩ আর্থিক বছরেই সমাপ্ত করে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। সেই তালিকায় এলআইসি, সাধারণ বিমা, ব্যাঙ্ক এবং তেল সংস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এলআইসির পর সর্বাগ্রে সাধারণ সরকারি বিমা সংস্থাকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হচ্ছে। ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স, ওরিয়েন্টাল ইনসিওরেন্স এবং ইউনাইটেড ইনসিওরেন্স, এই তিন বিমা সংস্থার মধ্যে যে কোনও একটিকে প্রথমে চিহ্নিত করা হবে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে অর্থমন্ত্রকের ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট দপ্তরে বৈঠক ডাকা হয়েছে পরবর্তী বিলগ্নীকরণ নিয়ে। স্থির হয়েছে, যে কোনও একটি বিমা সংস্থার পর ভারত পেট্রলিয়ামকে বিক্রি করার প্রক্রিয়ায় হাত দেওয়া হবে। তারপর তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। পরবর্তী ধাপে ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে চিহ্নিত করা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সেই লক্ষ্যেই কি সম্প্রতি সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের প্রায় ৬০০ শাখা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে? ২০২১-২২ আর্থিক বছরে টার্গেট করা হয়েছিল ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে টার্গেট কমিয়ে করা হয় ৬৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেক্ষেত্রে আশা করা হয়েছিল মার্চ মাসের মধ্যেই এলআইসির শেয়ার বিক্রি হয়ে যাবে। তা হয়নি। অবশেষে মে মাসে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রাখার পরও তা পূরণ হচ্ছে না। মাত্র ২১ হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে তোলার কথা ভাবা হয়েছে। বিরোধীরা তীব্র সমালোচনা করেছে এই সিদ্ধান্তের। এলআইসির মতো সংস্থার শেয়ার অনেক কম দামে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদের আমল না দিয়েই এলআইসি’র শেয়ার বিক্রি প্রক্রিয়ার প্রথম পর্ব সমাপ্ত হতে চলেছে। সরকারের বিক্রির লক্ষ্য বিমা, ব্যাঙ্ক ও তেল সংস্থা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তিনটি সংস্থা বিক্রির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।