দিন দুয়েক আগেই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফ থেকে রেপো রেট বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশে মুদ্রাস্ফীতির চাপে ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ৪০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধি করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। গোটা দেশজুড়ে নাগাড়ে যে মূল্যবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছিল- তা আটকাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরবিআই। ভারতের বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির হার তা আরবিআই-এর ঊর্ধ্বসীমা ছাড়িয়েছে অনেকদিনই। বিপদ বুঝেই তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরবিআই।
কিন্তু, রেপো রেট বৃদ্ধি আবার কতকগুলো প্রশ্নের মুখেও দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল এই রেপো রেট বৃদ্ধি কি দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে বড় কোনও প্রভাব ফেলবে? আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে রেপো রেট বৃদ্ধি করার ফলে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি অনেকাংশেই সংকুচিত হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কেন? রেপো রেটের সঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক আছে কি? থাকলে সেটা ঠিক কী রকম?
রেপো রেট হল সেই সুদের হার, যার ভিত্তিতে আরবিআই দেশের ব্যাঙ্কগুলোকে টাকা ধার দিয়ে থাকে। রেপো রেট বাড়লে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক তাদের ইএমআই-এর হার, তথা অন্য সুদের হার বৃদ্ধি করে থাকে। অর্থাৎ আরবিআই যদি রেপো রেট বাড়ায় তবে বিভিন্ন ব্যাঙ্কও তাদের কর্তৃক প্রদত্ত ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি করে থাকে।
ঠিক এখানেই একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। বলা ভালো, কেন্দ্রের তরফ থেকে দেশের যে আর্থিক নীতি নেওয়া হয়েছে, সেই নীতিতে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাজা ভেঙে যাওয়া অর্থনীতির হাল ফেরাতে কেন্দ্রের তরফ থেকে ঋণ প্রদানের নীতি নেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ আপনি যদি কোনও ব্যবসা করেন তবে আপনাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্র আপনাকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেবে৷ কিন্তু, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় সহ একাধিক অর্থনীতিবিদদের যে উপদেশ ছিল, আমজনতার হাতে থোক টাকা তুলে দেওয়ার, সেই পরামর্শ কেন্দ্র শোনেনি। বর্তমানে রেপো রেট বাড়ানোয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাঙ্কের ঋণের উপর সুদের হার। তাই ঋণ নেওয়ার প্রশ্নে পিছিয়ে আসতে পারেন অনেকেই। এমনকি যে বৃদ্ধি ৮ থেকে ৮.৫ শতাংশ ধরে নেওয়া হয়েছিল, তা ৭ শতাংশে নেমে আসতে পারে।