অবশেষে আক্ষেপ মিটল টলিপাড়ার। চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘরে শুক্রবার থেকেই যাত্রা শুরু নতুন নন্দনের। চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীও নতুন নন্দনের কথা ঘোষণা করেন। দুপুরে এক ঝাঁক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে উদ্বোধন এই সরকারি ছবিঘরের। এবার থেকে আর পাঁচটা বাণিজ্যিক সিনেমা হলের মতোই এখানে টিকিট কেটে সিনেমা দেখা যাবে। শুক্রবার প্রথম শোয়ে থাকছে দেব ও রুক্মিণী জুটির ছবি ‘কিশমিশ’।
তার পরের শোয়ে দেখানো হবে সোহম-প্রিয়াঙ্কার ‘কলকাতার হ্য়ারি’। শেষ শোয়ে থাকছে ‘একেনবাবু’। এই সিনেমা হলে ১টা, ৪টে, ৭টা এই তিনটে শোয়েই দেখানো হবে ছবি। টিকিটের দাম ৩০ টাকা। সিনেমা শুরুর আধঘণ্টা আগে টিকিট কাউন্টার থেকে কাটা যাবে টিকিট। অনলাইন বুকিংয়েরও সুবিধা রয়েছে।
টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালের পাশেই ছিল রাধা স্টুডিও। বহু স্মৃতিবিজড়িত সেই স্টুডিওকেই চলচ্চিত্র শতবার্ষিকী ভবনে বদলে ফেলে সিনেমার সংগ্রহালয় করা হয়েছে। এখানেই ফিল্ম গবেষণার স্বার্থে, চলচ্চিত্র পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের জন্যে তৈরি করা হয় প্রায় দেরশো আসনের অডিটোরিয়াম। এই অডিটোরিয়ামকেই বদলে ফেলা হচ্ছে সিনেমা হলে।
মাল্টিপ্লেক্স হোক বা সিঙ্গল স্ক্রিন, হিন্দি ও দক্ষিণী সিনেমার চাপে বাংলা ছবি কোণঠাসা বলে অভিযোগ অনেক দিনের। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সিনেমা-অডিটও শুরু করেছে নবান্ন। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ মাস পর্যন্ত কোন হলে কত বাংলা সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে, তা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জানাতে হবে মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গল স্ক্রিনের মালিকদের।
বহু মহলের আক্ষেপ, হিন্দি- ইংরেজির দাপটে অনেক সময় বাংলা ছবি হল পায় না, কারণ হিন্দি ও ইংরেজি সিনেমা থেকে লাভ বেশি। এখন সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছে দক্ষিণী ছবিও। তাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন বাড়ছিল বাংলা ছবির। নতুন হলের বাণিজ্যিক ব্যবহার সেই পদক্ষেপেরই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।
২৬ এপ্রিল থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছিল। ভেনুর তালিকায় এই হলও ছিল। আগেও চলচ্চিত্র উৎসবে ব্যবহার হয়েছে এই হল। কিন্তু বছরের বাকি সময়, কার্যত ফাঁকাই পরে থাকে। এবার পুরোদস্তুর বছরভর হল ব্যবহার হবে। চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীও নতুন নন্দনের কথা ঘোষণা করেন।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত অবশ্য টিকা কেন্দ্র হিসাবেই ব্যবহার হয়েছে এই হল। সেই টিকাকেন্দ্রই এখন হয়ে যাচ্ছে টালিগঞ্জ টকিজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, সাংসদ দেব, চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, বিধায়ক সহম চক্রবর্তী প্রমুখ।