ত্রিপুরায় ব্যর্থ বিজেপি সরকার। অভিযোগ, রাজ্যের সামগ্রিক আইন শৃঙ্খলার চূড়ান্ত বিপর্যয় ঘটছে৷ প্রতিদিন বিরোধী দলের নেতা কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বাড়ি ঘর সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে, মহিলাদের উপর নির্যাতন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। রাজ্যের স্থবির পুলিশ প্রশাসন, মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা ও রাজ্যের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে ত্রিপুরায় আন্দোলন শুরু করল তৃণমূলের নয়া কমিটি৷
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যের ভয়াবহ বেকার সমস্যা, শূন্যপদপূরণ, বিকল্প কর্মসংস্থান সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ সে রাজ্যেপ সরকার৷ কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলনরত বেকারদের উপর ক্রমাগত নির্যাতন ও পুলিশি অত্যাচার চলছে। কর্মচারী নির্ভর রাজ্যে যেখানে নিয়োগ বন্ধ রেখে প্রতিদিন ছাটাই হচ্ছে, সেখানে কর্মচারীদের ২৮ শতাংশ ডিএ, কেন্দ্রীয় হারে বেতন ভাতা, বিভিন্ন দফতরের অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা, পিএসইউ কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারীদের মতো সুযোগ সুবিধা দেওয়া, পেনশনপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন দ্বিগুণ করা এবং কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যের গ্রাম-পাহাড়-সহ সর্বত্র পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রতিদিন পানীয় জলের দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসে তালাঝুলিয়ে পথ অবরোধ করছেন স্থানীয় জনগণ। রাজ্যের প্রতিটা মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করার দাবি জানানো হচ্ছে।১০৩২৩ শিক্ষকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা -সহ আত্মহত্যা করা ও মৃত্যু হওয়া শিক্ষকদের পরিবারের অন্তত একজনকে চাকরি দিতে হবে, এমনটাই দাবি নতুন কমিটির। রাজ্যের সব মহকুমা, জেলা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দুটি মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করার দাবিও জানানো হয়। নতুন কমিটির তরফে বলা হয়েছে, রাজ্যের ভেঙে পড়া কৃষিক্ষেত্রের উন্নতি দরকার। পর্যাপ্ত সেচব্যবস্থার অভাবে অধিকাংশ জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকছে। কৃষকদের সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে না এবং দুর্নীতি হচ্ছে৷ দুর্নীতিগ্রস্থ আধিকারিকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানায় তারা।
এখানেই শেষ নয়৷ রাজ্যের তফশিলি জাতিদের প্রকৃত জনসংখ্যা নিরূপণ করা-সহ লোকসভার একটি আসন তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষণ ও তফশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল-স্টাইপেন্ড বৃদ্ধি, প্রকৃত এসসি-দের সনাক্ত করে জাল এসসি সার্টিফিকেটধারীদের শাস্তি প্রদান করার দাবিও জানানো হয়েছে। দাবিতে রয়েছে, রাজ্যের এডিসি এলাকার শিক্ষা-স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ্ব পানীয়জলের সুব্যবস্থা-সহ তফসিলি জনজাতিদের খাস ল্যান্ড ও ফরেস্ট ল্যান্ডে বসবাসরত জনজাতিদের উচ্ছেদ বন্ধ করা-সহ টিটিএডিসি-কে টেরটোরিয়াল কাউন্সিলে পরিণত করা, কেন্দ্র থেকে সরাসরি অর্থ ও অধিক ক্ষমতা প্রদানের দাবি। রাজ্যের শ্রমজীবী অংশের মানুষ প্রতিদিন কাজ হারাচ্ছেন। যানবাহন চালক, অটো-টমটম চালক, ফুটপাথের হকার, ফেরিওয়ালা, নির্মাণ শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা-সহ অসংগঠিত সমস্ত শ্রমজীবী অংশের মানু্ষদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান করার দাবিও জানানো হয়েছে।