চলতি বছরে আসানসোল উপনির্বাচনে কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। ভয়ঙ্কর পতন ঘটেছে গেরুয়া শিবিরের। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তুঙ্গে উঠেছিল ‘বাঙালি বনাম বহিরাগত’ তর্জা। চলতি বছরে আসানসোল উপনির্বাচনেও তা ফের নতুন করে মাথাচাড়া দেয়। কিন্তু পুরোদস্তুর ‘খামোশ’ করে বিরোধীদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন বলিউড তারকা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শত্রুঘ্ন সিনহা। কিন্তু, ‘বিহারি বাবু’ থেকে ‘বাঙালি বাবু’ হয়ে ওঠার যাত্রাটা কেমন ছিল? তা নিয়েই বিশেষ সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন শত্রুঘ্ন।
বাংলার ভোটে প্রথমবার দাঁড়িয়ে এত সহজে প্রতিপক্ষের মুখের হাসি কেড়ে নিলেন কী করে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নতুন করে আত্মবিশ্বাসী দেখায় এই পোড় খাওয়া বলিউড তারকা তথা রাজনীতিবিদকে। প্রশ্নের উত্তরে শত্রুঘ্ন বলেন, “এতদিন পর্যন্ত আমি জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, তা এক রাজ্য আমাকে দেয়নি। বাংলা, বিহার, হরিয়ানা, পঞ্জাব, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশের মানুষের ভালোবাসায় আজ আমি এই জায়গায়।
সাড়া দেশের মানুষের জনমত পেয়েছি। সর্ব-ধর্ম সমন্বয়, ধর্মনিরপেক্ষতার আঙিনায় আসানসোলে যে সৌভ্রাতৃত্বের আবহ রয়েছে তা সত্যিই অতুলনীয়। এখানে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বাঙালি পরিবার রয়েছে, সেখানে আবার বিহার, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মানুষ রয়েছেন প্রায় ৫০ শতাংশ”। এই সমীকরণই তাঁর জয়ের রাস্তা প্রশস্ত করছে বলে দাবি শত্রুঘ্নর।
‘বাঙালি-অবাঙালি’ রসায়নের কাঁধে ভর করেই ঝড় উঠেছে তৃণমূলের ভোটবাক্সে। তবে শত্রুঘ্নর ‘স্টারডম’ নাকি তৃণমূলের সাংগঠনিক ক্ষমতা, কিসের জোরে প্রথমবার আসানসোলে জয় ছিনিয়ে আনল ঘাসফুল শিবির? এই প্রশ্নের উত্তরে শত্রুঘ্ন বলেন, “আমি চারবারের সাংসাদ, দুই বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, আমি প্রায় ২৫ বছরের বেশি সংসদে কাটিয়েছি। তাই এখন তো আমি শুধু স্টার-ফেস নই।
মমতার পক্ষে দাঁড়িয়ে আসানসোলের নবনির্বাচিত সাংসদের মত, “খেলা হবে স্লোগানকে হাতিয়ার করে যে ভাবে বিজেপির পেশি শক্তি, অর্থ শক্তির মোকাবিলা করে জয় ছিনিয়ে এনেছেন মমতা তা অবশ্যই মনে রাখার মতো। মমতাই চব্বিশের গেম চেঞ্জার। খুবই শীঘ্রই চব্বিশের রণনীতি প্রকাশ হবে। তাতেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে”।
তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। আমার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি সম্পর্কে সবাই জানে। এটা অবশ্যই জয় ছিনিয়ে আনতে আমাকে অনেকটা সাহায্য করেছে। কিন্তু তারপরেও বলব যেভাবে মমতা দিদি আমকে আসানসোলের মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন তাও অনেকটা ছাপ ফেলেছে। এর আগে এই আসন তৃণমূল কখনওই পায়নি। আসানসোলে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। তাই এই আসন আমাদের দখলে আনতেই হত, সেই লক্ষ্যে আমরা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলাম”।