গত কয়েক বছর ধরে একটানা মৃত্যু আর হাহাকার দেখেছি আমরা। চারপাশ থেকে রোজ শোনা যেত নানান দুঃসংবাদ। এই কিছুদিন যাবৎ সবকিছু স্বাভাবিক হতে আরম্ভ করেছে, এরাই মধ্যে আবারও এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁও জেলাকে। হাসিখুশি বিয়েবাড়িতে নেমে এল শোকের ছায়া।
বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ভয়াবহ মৃত্যু হল একই পরিবারের পাঁচজন সদস্যের। তাঁদের গাড়িতে আগুন লেগে যায়। কিন্তু, তারপর পাঁচজনের মধ্যে কেউই আর গাড়ির বাইরে বের হতে পারেননি। জ্বলন্ত গাড়ির ভিতরেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে প্রাণ যায় তাঁদের। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। কালভার্টে ধাক্কা খাওয়ার পর আগুন লেগে যায় একটি চারচাকা গাড়িতে। গাড়ির ভিতরেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় একই পরিবারের পাঁচজন সদস্যের। ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁও জেলায়।
এদিকে, এই দুর্ঘটনার খবর শোনার পরই শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নিহতদের পদবী কোচার। মুখ্যমন্ত্রী কোচার পরিবারের আত্মীয় ও পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই এই এলাকায় ব্যাপক ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়। তার জেরেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে এটি নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহের কাজও শুরু করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় হতদের মধ্যে রয়েছেন পরিবারের কর্তা, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের তিন মেয়ে। শুক্রবার রাত ১টা থেকে ২টোর মধ্যে দুর্ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, পরিবারের সদস্যরা বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে অন্য গ্রামে গিয়েছিলেন।
সেখান থেকে ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। রাজনন্দগাঁও থেকে খৈরাগড় যাওয়ার পথে নিহতদের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাটি ঘটে তেহলকাদি থানার অন্তর্গত সিঙ্গাপুর গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় রাস্তায় লোক খুব বেশি ছিল না। ফলে ঠিক কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটা এখনই বিস্তারিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে, পথচলতি কিছু মানুষই গাড়িটিকে প্রথম দেখতে পান।
তাঁরা দেখেন সেটি রাস্তার মধ্যেই উলটে পড়ে রয়েছে এবং তাতে আগুন ধরে গিয়েছে। গাড়ির অবস্থান দেখে মনে হয়েছে, কালভার্টে ধাক্কা খেয়েই উলটে গিয়েছে সেটি। এরপর প্রত্যক্ষদর্শীরাই পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার খবর দেন।
পরে জানা যায়, দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের সদস্যরা খৈরাগড়ের গোলবাজার এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তাঁরা বলোদে গিয়েছিলেন। সেখানেই একটি বিয়েবাড়িতে তাঁদের নিমন্ত্রণ ছিল। ঘটনায় নিহত দম্পতি বয়সে প্রৌঢ়। তাঁদের তিন মেয়ের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।
দুর্ঘটনার খবর জানার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান তেহলকাদি থানার পুলিশকর্মীরা। রাজনন্দগাঁওয়ের অতিরিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় মহাদেব জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কীভাবে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, কেন নিহতরা কেউ গাড়ি থেকে বেরোতে পারলেন না, কোন পরিস্থিতিতে পাঁচজনকেই পুড়ে মরতে হল, তার সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।