ছাত্র আন্দোলনের কারণে সাম্প্রতিক কালে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে বিশ্বভারতীর নাম। এবার ফের চাঞ্চল্য বিশ্বকবির স্মৃতি বিজড়িত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বিশ্বভারতীর ছাত্রাবাস পাঠভবনে ছাত্রের মৃত্যুর জেরে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল ক্যাম্পাসে। ফের বিতর্কের মুখে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছাত্রের পরিবারকে মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে মৃত ছাত্রের পরিবার। শুক্রবার সকালে যোগ দেন তার বাবা ও ঠাকুমা। টানা চলছে ঘেরাও। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন পড়ুয়ারা। বন্ধ সমস্ত বিভাগের পঠনপাঠন।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। উত্তরশিক্ষায় দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র অসীম দাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় ছাত্রাবাসের নিজের ঘর থেকে। তড়িঘড়ি তাকে বিশ্বভারতীর নিজস্ব পিয়ারসন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। চিকিৎসকরা অসীমকে মৃত বলে ঘোষণা করার পরই রীতিমতো উতপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। মৃতের পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে থেকে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুন, প্রমান লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের মৃত ছাত্রের বাবা। তদন্ত শুরু শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। এই ঘটনায় শোকের ছায়া বিশ্বভারতীতে। আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের চুড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। উত্তরশিক্ষা ছাত্রাবাসে কোনও হস্টেল সুপার নেই। ওয়ার্ডেনও অস্থায়ী।
জানা গিয়েছে, নানুর থানার বনগ্রামের বাসিন্দা অসীম দাস বিশ্বভারতীর পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। উত্তরশিক্ষা ছাত্রাবাসে থেকে সে পড়াশোনা করত৷ দ্বিতীয় শ্রেনী থেকে সে পাঠভবনে হস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে এই হস্টেল ছাত্রদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, অসীম তার বেশ কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে হস্টেলের একটি ঘরে থাকছিল। বৃহস্পতিবার সকালে অসীম-সহ তার বন্ধুরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অন্য বন্ধুরা পৌনে সাতটায় গৌরপ্রাঙ্গনে প্রার্থনা করতে গেলেও অসীম যায়নি। তারপরে সে ক্লাসে না আসায় বন্ধুরা হস্টেলে ফিরে এসে দেখে ফ্যানে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। তারপরই শোরগোল শুরু হয়ে যায়।