গত রবিবার রামনবমীর মিছিল ঘিরে হিংসা ছড়ায় বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে। সংঘর্ষের সময় খারগোনের সঞ্জয় নগর-সহ চারটি এলাকায় ১৬টি বাড়ি এবং ৩৪টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। সেদিন রবিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ ২৬ বছরের আচমকাই সুমিত চন্দোককে সাহায্য চেয়ে ফোন করেছিলেন তাঁর বন্ধু সাদিক খান। মধ্যপ্রদেশের খারগোনের সঞ্জয় নগরে সুমিতের বাড়ির ৫০০ মিটার দূরত্বেই থাকেন সাদিক। ওই দিন সন্ধেয় একদল উন্মত্ত জনতা সাদিক খানের বাড়ি লক্ষ্য করে অনবরত পাথর ছুঁড়ছিল। সাহায্যের জন্য সবার আগে বন্ধু সুমিতের কাথাই মাথায় আসে সাদিকের। বন্ধুকে ফোন করে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলেন সাদিক।
সুমিত চান্দোকে পেশিজনিত রোগে ভুগছেন। তাই শারীরিক সমস্যার কারণে নিজে যেতে না পারলেও তড়িঘড়ি বন্ধু সাদিককে সাহায্য করতে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ছোট ভাই অমিতকে। এ প্রসঙ্গে সুমিত বলেন, ‘আমার ভাই যখন সেখানে পৌঁছোয় তখন সাদিকের বাড়ি জ্বলছিল। অমিত তাঁদের বাড়ির বাচ্চাদের সঞ্জয় নগরের আরও ভিতরে তাঁদেরই আত্মীয়দের বাড়িতে নিয়ে যায়। ওঁদের একটি বাইকে দাঙ্গাকারীরা আগুন দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সাদিকের পরিবারকে বাঁচাতে যাওয়ায় দাঙ্গাবাজরা অমিতকেও মারধর করেছিল।’ খারগোনে দাঙ্গা পরিস্থিতির মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে সুমিত চান্দোকে এবং সাদিক খানের এই গল্প। হিন্দু-মুসলিম সৌভ্রাতৃত্বের কথা মনে করাচ্ছে এই দুই বন্ধুর গল্প।
চান্দোকে বলেন, ‘সাদিকদের বাঁচাতে আমি আমার ভাইকে পাঠানোর আগে দু’বার ভাবিনি। কারণ, আমার যখন নেক্রোসিসের অপারেশন হচ্ছিল তখন এই সাদিকই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এবার তাঁর প্রয়োজনে তাঁকে সাহায্য করা সঠিক বলে মনে হয়েছিল।’ উল্লেখ্য, রবিবারের হিংসার ঘটনায় সাদিক খানের ১৪ জনের যৌথ পরিবার শুধু গৃহহীনই হয়নি, সংঘর্ষের জেরে আগুন লাগানোর ঘটনায় তাঁদের প্রায় সব সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে গত রবিবার রামনবমীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষের সময় খারগোনের সঞ্জয় নগর-সহ চারটি এলাকায় ১৬টি বাড়ি এবং ৩৪টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের খারগোনে হিংসার জেরে ৩৩টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। মোট ১২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।