মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের বারংবার কোণঠাসা করার ঘটনা উঠে এসেছে সামনে। ইদানিং তা আরও বেড়েছে। সেই নিয়েই এবার গোল বাঁধল খোদ পদ্ম শিবিরের ঘরে। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা এই সমস্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মন্তব্য করেছেন, ‘দয়া করে মুসলিমদের শান্তিতে থাকতে দিন’। সেই সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে যে বিজেপির আরও দুজন বিধায়ক ইয়েদুরাপ্পার এই মন্তব্যকে সমর্থনও জানিয়েছেন।
হিজাব বিতর্ক থেকে শুরু করে সম্প্রতি হিন্দু মন্দিরের সামনে মুসলিম ফল বিক্রেতার দোকানপাট ভাঙচুর, এই ধরণের একাধিক খবরকে কেন্দ্র করে বিগত কয়েক মাস ধরে একাধিকবার খবরের শিরোনামে এসেছে দক্ষিনের রাজ্য কর্ণাটক। প্রথমে হিজাব বিতর্ক, এরপর হালাল মাংস এবং পরে কর্ণাটকের একাধিক জায়গায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর আক্রমণ, সবকিছু নিয়েই এই মুহূর্তে বেশ অশান্ত কর্ণাটকের পরিবেশ।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘আমি চাই হিন্দু-মুসলমান এমনভাবে থাকুক যেন মায়ের সন্তানেরা একসঙ্গে থাকে। এই অবস্থায় যদি কিছু দুষ্কৃতী তাতে বাধা দেয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তাঁর করা এই মন্তব্যকে সমর্থন করেন আরও দুই বিজপেই বিধায়ক।
তবে এখনও কর্ণাটকের বহু নেতা মন্ত্রীর দাবি যে হিন্দু কোনও প্রতিষ্ঠানের সামনে কিংবা হিন্দু দ্বারা আয়োজিত কোনও মেলায় ব্যবসা করতে পারবেন না মুসলিম ব্যবসায়ীরা এই প্রসঙ্গে সংসদের মাটিতে দারিয়েও গলা চড়ান আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জেসি মধুস্বামী। তবে পরে অবস্য ওই মন্ত্রী সুর বদলে ওই মুসলিম ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালানো দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে কর্ণাটকের মুসলিমদের বিরদ্ধে যে সমস্ত বিধিনিষেধ জারি করছে সেই রাজ্যের বিজেপি সরকার তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বহুবার সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বারংবার মুসলিম সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার খবর করা হচ্ছে এমন অভিযোগও তুলতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলের একাধিক সদস্যদের।
এবার সেই তালিকাতেই যোগ হল ইয়েদুরাপ্পার নাম। তাহলে কি পদ্ম শিবিরের হাত ছাড়তে চলেছেন ইয়েদুরাপ্পা? বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর করা এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মাথাচারা দিয়েছে এই প্রশ্ন। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি কর্ণাটকের ধারওয়াড়ে একটি মন্দিরের বাইরে একজন মুসলিম ফলবিক্রেতার গাড়ি ভাঙচুর করেন হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই শ্রী রাম সেনার কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই ইয়েদুরাপ্পা হিন্দু সংগঠনের সদস্যদের এই ধরণের কাজ না করার অনুরোধ করেছেন বলে খবর। সেই সঙ্গে তিনি এও অনুরোধ করেছেন জেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের শান্তি এবং মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে দেওয়া হয়।