ইংরাজির বিকল্প হিন্দীকে মান্যতা দেওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই বিবৃতিকে ঘিরে এবার তীব্র সুর চড়াতে শুরু করল বিরোধীরা। অনেকের মতে, বিজেপির অন্যতম গোপন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাংলা, তামিল, তেলুগু, উর্দুর উপর হিন্দীর দাদাগিরি কায়েম করা। জাত্ম্যাভিমানে সুড়সুড়ি দিয়ে হিন্দীকে ইংরেজির বিকল্প হিসাবে সামনে এনে আদতে হিন্দীর আগ্রাসন চালাতে চাইছে বিজেপি সরকার’।
শাহ বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী দেশের সরকারি কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় হিন্দি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাই ঠিক করেছেন সরকারি কাজে সরকারি ভাষাই ব্যবহার করতে হবে। এতে অবশ্যই হিন্দির গুরুত্ব বাড়বে। সরকারি ভাষাকে দেশের সংহতি রক্ষার কাজে ব্যবহার করার সময় এসে গিয়েছে।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যখন দু’টি ভিন্ন ভাষার সরকারি কর্মী নিজেদের মধ্যে কথা বলবেন, তাঁদের ভাষা যেন এ দেশীয় হয়, ইংরেজি নয়’।
শাহের বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, ডিএমকে। বাংলা থেকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি দিল্লিতে বলছেন, ‘হিন্দী দিয়ে পেট ভরবে তো? মুদ্রাস্ফীতি, বেকারি-সহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতেই এখন হিন্দী নিয়ে পড়েছে ওরা’। কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার মত, ‘হিন্দী কখনই আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল না। তা হতে দেবও না’।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘হিন্দী ভাষাকে আমরা শ্রদ্ধা করি৷ হিন্দীভাষীদেরও শ্রদ্ধা করি৷ হিন্দী ভাষাভাষী শিল্পী, সাহিত্যিক, সাধারণ মানুষ সকলকে ভালবাসি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেভাবে আগ্রাসনের একটা ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত দিয়েছেন, আমরা তা সমর্থন করি না। বিরোধিতা করি। নির্দিষ্ট কয়েকটি রাজ্যে সবাই হিন্দি বলেন বলে দেশের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হবে, বাংলার ওপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হবে, আসামে-উড়িষ্যায় হিন্দী চাপিয়ে দেওয়া হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নীতি হতে পারে না। এটা সুপরিকল্পিত হিন্দি আগ্রাসনের একটা উদ্বেগজনক প্রতিফলন। হিন্দীকে যদি চাপিয়ে দেওয়া হয় আমাদের বিরোধিতা থাকছে’।