সংসদে তৃণমূলের প্রশ্নের মুখে ঘোর বিড়ম্বনায় পড়ল মোদী সরকার। ২০১৪ সালের পর থেকে ভোটমুখী রাজ্যে বিরোধী নেতানেত্রীদের উপর ইডির কত তল্লাশি হয়েছে, সোজাসাপ্টা জানতে চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। এই প্রশ্নে প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছে মোদী সরকার। অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী জবাব দিয়েছেন বটে। তবে তা কার্যত দায়সারা বলেই জানিয়েছে তৃণমূল। পরিসংখ্যান এড়িয়ে মন্ত্রী জানিয়েছেন, “তথ্যের ভিত্তিতেই আইন মোতাবেক তল্লাশি চালায় ইডি। রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক বিচার করা হয় না।” মন্ত্রীর এই উত্তর পেয়ে পাল্টা সরব হয়েছেন মালা রায়। সংসদের বাইরে বললেন, “সাহস থাকলে স্পষ্ট জবাব দিক মোদী সরকার। এভাবে জবাব এড়িয়ে যাওয়া মানেই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই সত্যি। ভোট এলেই ইডি-সিবিআইয়ের মতো এজেন্সির অপব্যবহার করে মোদী সরকার।”
পাশাপাশি, সরকারি সমীক্ষার দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ারও প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের তোলা প্রশ্নের জবাবে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ন্যাশনাল সাম্পেল সার্ভের মূল কাজ সরকারি কর্মীরাই করেন বটে। তবে বাড়তি কাজের জন্য আউটসোর্স করা হয়। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েই সমীক্ষা করতে পাঠানো হয়। কিন্তু বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষায় বিশ্বস্ততা কোথায়? তথ্য যে বেহাত হবে না, তার গ্যারান্টি কী? পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন জহরবাবুও।
উল্লেখ্য, এদিন লিখিত সওয়াল-জবাবের পাশাপাশি সোমবার সংসদে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির বিরোধও বাধল। লোকসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে কথা বাদানুবাদ হল সৌগত রায়ের। বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন সীতারামন। তারই মধ্যে সৌগতবাবু বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বিষয়টি খুবই চঞ্চল। সহজে উবে যায়। কোনও স্থায়িত্ব নেই। এই সমালোচনা শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সীতারামন। স্পিকারকে বলেন, আমি যখনই কিছু বলতে উঠি, তখনই কেন সৌগত রায় বিরক্ত করেন? এই আচরণ মোটেই ভালো নয়। স্পিকার ওম বিড়লা অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। পরে সৌগতবাবু সংসদের বাইরে বলেন, “সত্যি কথা এরা সহ্য করতে পারে না। তাই শুনলেই রেগে যায়। মোদী সরকারের সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ সোনার পাথরবাটি। হয়নি কিছুই। সংসদে শুধু মিথ্যা বলে চলেছে।”