রামপুরহাটের বগটুই কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে ঘুরে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘ল্যাংচা খেতে খেতে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে’ গিয়েছিলেন দলের বিধায়করাও। এমনকী বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও সেই গ্রামে গিয়েছেন ভিন রাজ্যের তিন সাংসদও। কিন্তু দেখাই মিলল না দিলীপ ঘোষের। যা নিয়ে কানাঘুঁষো চলছে খোদ গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই। কেউ কেউ বলছেন, দিলীপ-শুভেন্দু দূরত্বের কথা সকলেরই জানা। সেই দূরত্ব বা মতানৈক্যের ছায়া যাতে এই আন্দোলনে না পড়ে, সে কারণেই দিলীপকে দূরে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এখন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেও দিলীপকে ইদানীংকালে রাজ্যের দলের সব কর্মসূচীতেই অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। তিনি যখন রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখনকার মতোই সব বিষয়ে তাঁকে মতামত দিতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার উল্লেখযোগ্য ভাবেই চুপ তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে বগটুই আন্দোলন যে চেহারাই নিক না কেন, চলতি মাসে দিল্লীতেই থাকবেন দিলীপ। ফিরবেন এপ্রিল মাসে সংসদের অধিবেশন শেষ হলে। সাধারণ ভাবে দেখা যায়, কলকাতা, দিল্লী বা রাজ্যের যে প্রান্তেই তিনি থাকুন, প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সব বিষয়েই মন্তব্য করেন দিলীপ। সাতসকালে যা মনে হয়, উগরে দেওয়াই তাঁর মর্জি। বগটুই কাণ্ডের আবহে রাজ্য থেকে দূরে থাকাটাও কি দিলীপের নিজস্ব মর্জি? না কি এর পিছনে দলীয় কোনও নির্দেশ রয়েছে?
দিলীপ বগটুই থেকে দূরত্বে থাকার কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ মুখ খুলতে রাজি না-হলেও অনেকের বক্তব্য, সকলেই সবকিছুতে অংশ নেবেন, এটা বিজেপিতে হয় না। সকলের নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে। বগটুই কাণ্ড নিয়ে দল যে আন্দোলন পরিকল্পনা করেছে, তার দু’টি ভাগ রয়েছে। এক দিকে পরিষদীয় দলের আন্দোলন। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুভেন্দু। তিনি বিধায়কদের নিয়ে বগটুই গিয়েছেন, বিধানসভায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বিজেপি যে প্রতিনিধি দল ঠিক করেছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। বিজেপি সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে শুধু সুকান্ত এবং শুভেন্দুর নেতৃত্বেই হোক বগটুই আন্দোলন। সেই কারণেই রাজ্যের সাংসদ চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজ্য নেতারাও চুপ থাকছেন। দলের যুব বা মহিলা মোর্চাও এখনও পর্যন্ত সে ভাবে কোনও কর্মসূচী নেয়নি।