বিগত কয়েক বছরে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেল। আর সেজন্যই ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বিগত পাঁচ বছরের তুলনায় সবথেকে বেশি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখছে রেলমন্ত্রক। পরিমাণ, ২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এমনই জানা যাচ্ছে রেল বোর্ডের শীর্ষ সূত্রে। সরকারি সূত্রের খবর, রেলের যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণ খাতে এই টার্গেট স্থির করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই লক্ষ্যমাত্রাকে কেন্দ্র করে তুমুল জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এই রেকর্ড আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে কি শেষমেশ সাধারণ ট্রেন যাত্রীদের ঘাড়েই বড়সড় বোঝা চাপাতে চাইছে মোদী সরকার? যদিও এই ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি রেলমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকগণ।
রেল বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, লকডাউনের কারণে রেলকে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, এমন মোটেও নয়। বরং তার আগে-পরের তিনটি অর্থবর্ষেই চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। রেলের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণ খাতে রেলের মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই আয়ের পরিমাণ কমে যায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, ২০১৮-১৯ কিংবা ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে সারা দেশে করোনার প্রভাব ছিল না। করোনা প্রভাবিত আর্থিক বছর মূলত ২০২০-২১। ওই অর্থবর্ষে রেলের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ তার আগের আর্থিক বছরের তুলনায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা কমে যায়।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে রেলের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেলের যা রাজস্ব আদায় হয়েছে, তা তার আগেরবার উল্লিখিত সময়সীমা পর্যন্ত প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি। আর এই হিসেব কষেই বিগত পাঁচ আর্থিক বছরের মধ্যে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে সবথেকে বেশি আয়ের টার্গেট স্থির করেছে রেল বোর্ড। রেলমন্ত্রক সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ১ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে যাত্রীদের ভিড়ও আগের মতোই বৃদ্ধি পাবে। ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে বিশেষ সমস্যা হবে না বলেই দাবি করেছে রেল।