দীর্ঘসময়ের জেরা শেষ হবার পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতর থেকে বেরলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ ইডির দপ্তরে ঢুকেছিলেন তিনি। বের হলেন সন্ধে সাড়ে সাতটা। টানা সাড়ে আট ঘণ্টা জেরা শেষে বেরিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের গলায় ধরা পড়ল আত্মবিশ্বাস। জানালেন, “দশ পয়সার অভিযোগও কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমাকে ডাকার দরকার নেই, ফাঁসির মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করব।” চোখে অস্ত্রোপচারের যন্ত্রণা নিয়ে রবিবারই পাড়ি দিয়েছিলেন দিল্লী। কয়লা পাচার কাণ্ডে তদন্তের সহযোগিতার জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তলবকে গুরুত্ব দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সোমবার সময়ের আগেই দিল্লির ইডি দপ্তরে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জানিয়েছিলেন, “যা যা জানি সবই জানাব। সহযোগিতা করব।”
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসেও সাংসদকে তলব করেছিল ইডি। সেই সময়ও প্রায় সাড়ে আট-ন’ঘণ্টা জেরাও করা হয়েছিল তাঁকে। এবার প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা চলল জেরা। সেখান থেকে বেরিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন অভিষেক। বললেন, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই করলে হারবে জানে। তাই আমাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু আমি ভয় পাই না। ইডি, সিবিআইয়ের সামনে মাথা নোয়াব না।” প্রসঙ্গত, এদিনের শুরুতে ইডির তলবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা। কিন্তু তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লীতে ইডির দপ্তরে নয়, তদন্তের স্বার্থে কলকাতার দপ্তরে ডাকা হোক সস্ত্রীক ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে। আগেই এই আরজি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। রায় ঘোষণার পরই ফের সাংসদকে নোটিস পাঠায় ইডি। এদিন সকালে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রুজিরা দেবী। আবেদন জানান, যাতে তাঁদের কলকাতার ইডি দপ্তরেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কিন্তু সেই আবেদন গ্রহণই করেনি শীর্ষ আদালত।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক আরও বলেন, “আমাকে দ্বিতীয় বার ডেকে পাঠানো হয়েছিল। দেড় বছর আগে যা বলেছিলাম, ওই অবস্থানেই অনড়। অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। আমি মাথা নত করব না। ইডি তাদের কাজ করছে, আমি তদন্তের সহযোগিতা করেছি, সব নথি জমা দিয়েছি। ইডি তাদের কাজ করছে, আমি তদন্তের সহযোগিতা করেছি, সব নথি জমা দিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “কলকাতায় ইডি-র দফতর আছে, কিন্তু হেনস্থা করার জন্যই দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।এরা গণতান্ত্রিকভাবে লড়তে পারে না বলে এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাঁদের কতবার ডেকেছে? আমি বিরোধী দল তৃণমূল করি বলেই আমি চোর, বাকিরা সাধু। সুপ্রিমকোর্টে আগামী দিনে আমার মামলার শুনানি হবে।”