আজ ৮ই মার্চ। নারী দিবস। ভারতীয় নারীদের মধ্যে ১৬ শতাংশ দলিত। দলিত পরিচিতির জন্য যেমন তাঁদের সামাজিক অন্যায়ের শিকার হতে হয়, তেমনই লিঙ্গের ভিত্তিতেও বৈষম্যের শিকার তাঁরা। অর্থনৈতিক ভাবে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা গোষ্ঠীর মধ্যেও অন্যতম দলিত নারীরা। ফলে ‘দলিত নারী’ নানা স্তরে অবদমনের শিকার।
তবু সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দলিত কন্যারা। আজ থেকে নয়। এগিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বহু যুগ ধরে। লড়াইটি কঠিন। তবে সাফল্যও পেয়েছেন কেউ কেউ। যেমন ঊনবিংশ শতকে সাবিত্রীবাঈ ফুলের চেষ্টায় নারী শিক্ষার কাজ এগিয়েছে অনেক দূর।
আবার এ সময়ে মায়াবতী কিংবা মীরা কুমারের নাম জানেন না, এমন কম ভারতীয়ই আছেন। এমন আরও বহু নারী এগিয়ে এসেছেন সমাজের নানা বাধা জয় করে। পাশে দাঁড়াচ্ছেন অন্যদের, যাঁদের লড়াই কঠিনতর। নারী দিবসে তেমনই কয়েক জন ‘দলিত’ নারীর কাজের কথা জেনে নেওয়া যাক।
সীমা সমৃদ্ধি কুশওয়াহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। জন্ম উগ্রপুর নামক উত্তরপ্রদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে। ২০০৫ সালে সীমা কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন। আইনচর্চার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতায় স্নাতক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। নির্ভয়া কাণ্ডে তাঁর প্রত্যয়, আইনজীবী হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করে। বর্তমানে হাথরাস কাণ্ডেও নির্যাতিতার পক্ষের আইনজীবী তিনিই।
মীনা কোতোয়াল দিল্লীর এক জন প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক। একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন। মীনা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠ নিয়েছেন যথাক্রমে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মাস কমিউনিকেশন থেকে। এমফিল করেছেন বাবাসাহেব ভিমরাও আম্বেদকর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কেরলের মহাত্মা গাঁধী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছিলেন দীপার পিএইচডি ডিগ্রি। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অনশনে বসেন দীপা। রক্তাল্পতা ও হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় ভোগা দীপার লড়াইয়ের ফলে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপককে বরখাস্ত করতে বাধ্য হন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে দীপা পি মোহননের লড়াই একটি মাইলফলক।
শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী সোনাঝরিয়া মিনজ ভারতের ইতিহাসে দ্বিতীয় আদিবাসী নারী হিসাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন। ২০২০ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের দুমকার সিদো কানু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ছিলেন।
পাঞ্জাবের হতদরিদ্র দলিত পরিবারের সন্তান নদীপ কৌর লড়াই করছেন দলিত, দিনমজুর ও ক্ষেতমজুরদের হয়ে। দক্ষ সংগঠক হিসাবে পরিচিত নদীপকে কৃষক আন্দোলনের সময়ে গ্রেফতার করা হয়। নদীপের কারারুদ্ধ হওয়ার নিন্দা শুরু হয় আন্তর্জাতিক মহলেও। টুইট করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাগ্নি মিনা হ্যারিসও।
কর্নাটকের প্রবীণ পরিবেশকর্মী তুলসী গৌড়া ২০২০ সালে পদ্মশ্রী পান। প্রথাগত শিক্ষা না পেলেও উদ্ভিদ সম্পর্কে জ্ঞানের জন্য তাঁকে উদ্ভিদের বিশ্বকোষ বলে ডাকা হয়। হালাক্কি উপজাতির তুলসী নিজের হাতেই এক লক্ষেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন।
কর্নাটকের প্রবীণ পরিবেশকর্মী তুলসী গৌড়া ২০২০ সালে পদ্মশ্রী পান। প্রথাগত শিক্ষা না পেলেও উদ্ভিদ সম্পর্কে জ্ঞানের জন্য তাঁকে উদ্ভিদের বিশ্বকোষ বলে ডাকা হয়। হালাক্কি উপজাতির তুলসী নিজের হাতেই এক লক্ষেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন।
প্রথাগত ভাবে লেখাপড়া শেখেননি। কিন্তু হিমাচল প্রদেশে বেআইনি চুনা পাথরের খনির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন তিনিই। প্রথমে সিমলা হাইকোর্টে মামলা করেন। কোর্ট মামলা শুনতে না চাইলে আদালত চত্বরেই শুরু করেন অনশন।
শেষ পর্যন্ত কোর্ট মামলা গ্রহণ করে ও তিনি জয় লাভ করেন। তৎকালীন মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন পর্যন্ত তাঁর প্রশংসা করেন। সেই বছরই আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পান ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে সম্মেলনের সূচনা করেন।
প্রথাগত ভাবে লেখাপড়া শেখেননি। কিন্তু হিমাচল প্রদেশে বেআইনি চুনা পাথরের খনির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন তিনিই। প্রথমে সিমলা হাইকোর্টে মামলা করেন। কোর্ট মামলা শুনতে না চাইলে আদালত চত্বরেই শুরু করেন অনশন।
শেষ পর্যন্ত কোর্ট মামলা গ্রহণ করে ও তিনি জয় লাভ করেন। তৎকালীন মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন পর্যন্ত তাঁর প্রশংসা করেন। সেই বছরই আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পান ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে সম্মেলনের সূচনা করেন।
পশ্চিমবঙ্গের দলিত আন্দ…