মুকুল রায়ের মতো কয়েকজন দল ছাড়লেও বিধানসভায় খাতায়কলমে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭। সেখানে শাসক দলের ২১৩। যাকে বলে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। কিন্তু বিধানসভা, লোকসভায় কখনও ভোটাভুটি হলে তখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিচার হয় উপস্থিত বিধায়কদের মধ্যে কতজন কোন দিকে ভোট দিয়েছেন। বাজেট অধিবেশনে ভোটাভুটিতে সরকারপক্ষের বিধায়ক কম থাকলে সরকারের পতন হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়।
সোমবার নজরুল মঞ্চে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে বিধায়কদের এই ব্যাপারে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলে দিলেন, বাজেট অধিবেশন চলাকালে দলের বিধায়কদের রোজ বিধানসভায় আসতে হবে।
কারণ, সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, রাজ্যপাল ভাষণ পাঠ না করলে অধিবেশনের সূচনা হয়েছে বলে ধরা হবে না। ফলে বাজেট পেশও আটকে যাবে। দেখা দেবে সাংবিধানিক সংকট।
মুখ্যমন্ত্রী অধিবেশন কক্ষের বাইরে এসে গতকাল অভিযোগ করেন, সাংবিধানিক সংকট তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যপাল ধনকড় বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করে সমস্যা তৈরি করতে চাইছিলেন। রাজ্যপালের মতলব বুঝতে পেরেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বারে বারে অনুরোধ করেন ভাষণ পাঠ করার জন্য। শেষে রাজ্যপাল ভাষণের প্রথম ও শেষ লাইন পাঠ করে সভাকক্ষ ছেড়ে যান।
তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, গতকালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই মমতা এদিন দলের বিধায়কদের উদ্দেশে বলেন, বিধায়কদের রোজ বিধানসভায় আসতে হবে। না জানিয়ে অনুপস্থিত থাকা যাবে না। প্রতিদিন ভোট হয়। মনে রাখতে হবে এটা বাজেট সেশন। এখানে ভোটে হেরে গেলে কিন্তু সরকারটাই হেরে যায়। এটা মনে রাখবেন।
মনে করা হচ্ছে, সোমবার বাজেট অধিবেশনের উদ্ধোধনকে কেন্দ্র করে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বাজেট ভাষণ গোড়ায় পড়তে না চাওয়ার ঘটনা থেকে মুখ্যমন্ত্রী গেরুয়া শিবিরকে নিয়ে সন্দিহান।
গতকাল গোলমালের মধ্যে রাজ্যপাল প্রায় এক ঘণ্টা বাজেট ভাষণ পাঠ না করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রবীণ তৃণমূল বিধায়কেরা তাঁকে বারে বারে অনুরোধ করে ভাষণ পাঠ করার জন্য।