ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। সত্যকে সামনে আনতে আমজনতার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার আরটিআই বা রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট বা তথ্যের অধিকার আইন। অথচ দেশের নিরাপত্তার অজুহাত সেই প্রক্রিয়াকে কার্যত পঙ্গু করে দিয়েছে। তথ্যের অধিকার আইনে দায়ের করা মামলায় জবাব না দেওয়ার সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে। পরিসংখ্যান বলছে, এই ধরনের আরজিতে জবাব না দেওয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৮৩ শতাংশ। এবং এই প্রবণতার পিছনে রয়েছে দেশের নিরাপত্তা।
উল্লেখ্য, সদ্য প্রকাশিত এক হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০ সালে সারা দেশে কেন্দ্রীয় সরকারি মন্ত্রক এবং বিভিন্ন দফতরের নানা তথ্য দাবি করে ১২ লক্ষ ৯০ হাজারের বেশি আরটিআইয়ের আবেদন জমা পড়েছে। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সেই আবেদন বাতিল হওয়ার সংখ্যাও। ১৯-২০ বর্ষে জমা পড়া আবেদনের মধ্যে অধিকাংশ আবেদনের জবাব প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। ২০২০-২১ সালে এই বাতিলের সংখ্যা কিছুটা কমেছে তবে সংখ্যার নিরিখে তা বিশেষ কম নয়।কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ বা সিএইচআরআই-এর পক্ষে বেঙ্কটেশ নায়ক জানিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রকের অধীন ২১৮২টি দপ্তর বিষয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে। কত আরটিআইয়ের আবেদন জমা পড়েছে তা নিয়ে প্রতি বছরই প্রতিটি মন্ত্রককেই কেন্দ্রের সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হয়। তার থেকেই এই বিষয়ক পরিসংখ্যান মিলেছে।
এপ্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি আরটিআই জমা পড়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছ থেকে তথ্য জানতে চেয়ে। তবে অনেক তথ্যের ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার কারণে বিস্তারিত প্রকাশ করা সম্ভব হয় না এই যুক্তিতে জবাব দেওয়া হয়নি। এমনকী, ক্রেতাসুরক্ষা বিভাগের কাছে জমা পড়া আবেদনের ক্ষেত্রেও এই যুক্তিতে আরজি বাতিল করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এই বিভাগেরই ৪০১টি আরজি নিরাপত্তা যুক্তিতে খারিজ হয়েছে। উল্লেখ্য, ইউপিএ জমানায় তৈরি হওয়া তথ্যের অধিকার আইনে এবার পরিবর্তন আনার উদ্যোগ কেন্দ্রের। প্রস্তাবিত সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, রাজ্য ও কেন্দ্রের তথ্য কমিশনারের বেতন এবার নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার। বর্তমান তথ্য কমিশনারের মেয়াদকাল পাঁচ বছর। তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পান। কিন্তু, বিলটি পাশ হয়ে গেলে তথ্য কমিশনারের মেয়াদকাল ইচ্ছামতো বদলে দিতে পারবে সরকার।