ভোটে জিততে সঙ্ঘর্ষবিরতিতে থাকা জঙ্গিদের হাতে বিপুল অর্থ তুলে দিয়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। কেন্দ্র মঞ্জুরও করেছে তা। এবার এমনই অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। প্রসঙ্গত, বুথ দখল, ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে মণিপুরে ২৩টি বুথে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস-সহ চার বিরোধী দল। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, চূড়াচাঁদপুর ও পূর্ব ইম্ফল জেলার ১২টি বুথে শনিবার পুনর্ভোট হবে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে অখুশি কংগ্রেসের দাবি, কাংপোকপি জেলাতেও কুকি জঙ্গিরা ভোটকর্মীদের সামনেই বুথ দখল করেছে। ইভিএমে অন্য সব প্রতীক ব্ল্যাক টেপে ঢেকে শুধু বিজেপিকে ভোট দিতে বাধ্য করেছে। কিন্তু এই জেলার একটি বুথেও ফের ভোট গ্রহণ হচ্ছে না। গণতন্ত্রের নামে প্রহসনে পরিণত হয়েছে মণিপুরের ভোট।
প্রথম দফার ভোটের দিনে গুলিও চালিয়েছিল জোমি রিভেলিউশনারি আর্মি (জেডআরএ)-র জঙ্গিরা। ফের অভিযোগ এসেছে, বিজেপিকে ভোট না দেওয়ায় চূড়াচাঁদপুর জেলার সুয়াংফু গ্রামে পাঁচ কৃষককে মারধর করেছে ওই কুকি জঙ্গিরা। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, খেত থেকে ফেরার সময় জেডআরএ জঙ্গিরা তাদের ঘিরে ধরে। বিজেপিকে ভোট না দেওয়ায় ৫ জন কেপিএ সমর্থক কৃষককে জঙ্গি শিবিরে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অনেক ক্ষণ মারধর করার পরে মুচলেকা লেখানো হয়— ভবিষ্যতে জোমি জঙ্গিদের কথার বিরুদ্ধে যাবেন না তাঁরা। গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এই ঘটনা জানাজানি হলেও মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। জয়রামের দাবি, মণিপুরে জঙ্গিদের হাত করে ভোটে জিততে বিজেপি সরকার সংঘর্ষবিরতিতে থাকা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে ১৬.৬৩ কোটি টাকা দিয়েছে।
তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনবিধি ভঙ্গ করে ১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার সংঘর্ষবিরতিতে থাকা সংগঠনগুলিকে জন্য ১৫.৭ কোটি টাকা দিয়েছে। ১ মার্চ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলিকে দেওয়া হয় আরও ৯২.৬৫ লক্ষ টাকা। দুই দফার টাকাই মঞ্জুর করে কেন্দ্র। জয়রাম বলেন, ‘ভোটের মুখে দুই দফায় জঙ্গিদের এই বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়া ও জঙ্গিদের তরফে সরাসরি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার হুমকি প্রমাণ করে মণিপুরে ভোট কোনও ভাবেই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়নি। দ্বিতীয় দফায় টেংনৌপাল ও চান্ডেল জেলায় ভোট আছে। বোঝাই যাচ্ছে সেই ভোটেও ভোটাররা নির্ভয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন না।’ জঙ্গিদের মঞ্জুর করা টাকা, সরকারের তরফে দেওয়া চেক ও ব্যাঙ্ক ডিটেলস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাজ্যের সরকারি কর্মীরা যখন দু’মাস বেতন পাচ্ছেন না, মিড ডে মিল কর্মীরা ১৮ মাস বেতনহীন, তখনই জঙ্গিদের মধ্যে দেদার টাকা বিলি করে বিজেপি ডবল ইঞ্জিনের সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে।’