লজ্জার মুখে মোদী সরকার। জিএসটি আদায়ে রেকর্ড গড়ার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু একমাসের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ল তা। দেশজুড়ে মোট জিএসটি আদায়ের পরিমাণ কমে গেল এক ধাক্কায় ৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ বাংলার অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স ক্রমেই গোটা দেশের নজর কাড়ছে। শুধু যে জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারির জিএসটি আদায় বাংলায় অনেকটাই বেড়ে গেল, তাই নয়। জিএসটি আদায়ে রেকর্ড গড়ল বাংলা। করোনা-পূর্ববর্তী স্বাভাবিক সময়কেও ছাপিয়ে গিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসের জিএসটি আদায়ের অঙ্ক। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলার জিএসটি আদায় হয়েছিল ৩৪৯০ কোটি টাকা। সেখানে মঙ্গলবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলায় জিএসটি আদায় হয়েছে ৪৪৫০ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, অন্য অনেক রাজ্যের তুলনায় গত দু’বছরের মন্দা ছাপিয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর তালিকায় বাংলার প্রবণতা উজ্জ্বল। ২০২১ সালের শুরুতে ৪৩০০ কোটি টাকার সীমানা প্রথম পেরিয়ে যায় বাংলা। কিন্তু তারপরই এসেছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে আবার কমতে থাকে জিএসটি আদায়। এই বছর বাজেট ঘোষণার ঠিক শুরুতেই অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন জিএসটি আদায়ে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বকালীন নজির করেছে। ১ লক্ষ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। যদিও সেই তথ্য সঠিক ছিল না। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসেই জিএসটি আদায় ১ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকা স্পর্শ করে ফেলেছিল। করোনার প্রকোপ সরিয়ে ভারতের অর্থনীতি যে আবার চাঙ্গা হতে শুরু করেছে, এই ইতিবাচক বার্তা দেওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য।
স্বভাবতই, এই আভাসের কারণে সরকার আশা করেছিল, ২০২১-২২ সালের জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে ৯.২ শতাংশ। কিন্তু গত সোমবারই কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান মন্ত্রক এক ধাক্কায় এক শতাংশ কমিয়ে ঘোষণা করেছে সাড়ে ৮ শতাংশ মতো হতে পারে জিডিপির বৃদ্ধিহার। অর্থনৈতিক অগ্রগতির শ্লথতা অনুমান করে এবং কয়েকটি সেক্টরে বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ায় কারণেই এই পরিবর্তন। আর মঙ্গলবার ওই পূর্বাভাসকে আরও সঙ্কটে ফেলেছে জিএসটি আদায়ের প্রবণতা। ফেব্রুয়ারি মাসে যেখানে দ্রুত আর্থিক মন্দা ছাপিয়ে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নিশ্চিত ছিল, সেখানে কেন এভাবে কমে গেল জিএসটি আদায় সেটা নিয়ে অর্থমন্ত্রকের মধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে তারই মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে বাংলার পারফরম্যান্স।
বাংলার জিএসটি আদায় অনেকটাই বেড়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের তুলনায় এক লাফে জিএসটি আদায় বৃদ্ধিতে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে, দ্রুতহারে স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে বাংলার অর্থনীতি। করোনাপূর্ব সময়কালের তুলনায় জিএসটি আদায় বেড়ে যাওয়া যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক। এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা।