রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের আশঙ্কা শুরু হতেই বাড়ছিল ভোজ্য তেলের দাম৷ আর যুদ্ধ শুরু হতে না হতেই হু হু করে তেলের দাম চড়তে শুরু করেছে৷ কারণ গোটা বিশ্বে রাশিয়া এবং ইউক্রেনই সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেল বা সানফ্লাওয়ার অয়েলের মূল উৎপাদক এবং রপ্তানীকারী।
স্বাভাবিক ভাবেই দুই দেশ যুদ্ধ শুরু করায় সানফ্লাওয়ার অয়েলের সরবরাহ ধাক্কা খাবে বিশ্ব বাজারে৷ যার জেরে বাড়বে দাম৷ ভারতে যেহেতু ৯০ শতাংশ সানফ্লাওয়ার অয়েলেই রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আমদানি করা হয়, তাই এ দেশে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা আরও বেশি৷
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন সানফ্লাওয়ার অয়েলের চাহিদা রয়েছে৷ যার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার মেট্রিক টন দেশে উৎপাদিত হয়৷ বাকিটা আমদানি করতে হয়৷ ভারতে মোট যে পরিমাণ তেল আমদানি করতে হয়, তার ১৪ শতাংশই সানফ্লাওয়ার অয়েল৷
সানফ্লাওয়ার অয়েলের জন্য অন্য দেশের উপরে নির্ভরশীলতার জন্যই গত তিন বছরে হু হু করে ভারতের বাজারে এই তেলের দাম বেড়েছে৷ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যেখানে ভারতে এক লিটার সানফ্লাওয়ার অয়েলের দাম ৯৮ টাকা ছিল, সেখানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা ১৬১ টাকায় পৌঁছেছে৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে তেলের অগ্নিমূল্যের মূল কারণ ইউক্রেনের সঙ্কট৷ এই পরিস্থিতি কেটে গেলেই দাম কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী তারা৷ পাশাপাশি, তেলের সঙ্গে এথানল মেশানোর যে প্রস্তাবের উপরে কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিচ্ছে, তা কার্যকরী হলেও ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা কমার কথা৷ ২০২১ সালে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইউক্রেন, আর্জেন্টিনা, রাশিয়ার মতো মূল তেল রপ্তানাকারী দেশগুলিতে আবহাওয়াজনিত সমস্যা এবং করোনার জেরে শ্রমিক সঙ্কটে তেলের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হয়৷ যা দাম বাড়ার অন্যতম কারণ৷
সয়াবিন তেলের বৃহত্তম রপ্তানীকারী আর্জেন্টিনা৷ সেখানেও শুষ্ক আবহাওয়া এবং চিন ও ভারতে চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় গত বছর সয়াবিন তেলের দামও একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল৷ রাশিয়া এবং ইউক্রেনে খরা পরিস্থিতির কারণে বাড়ে সানফ্লাওয়ার অয়েলের দাম৷