সোমবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে রাশিয়া। আর তারপরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে মস্কো। বৃহস্পতিবার সকালেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন যে রাশিয়ার তরফে ইউক্রেনে মিলিটারি অপারেশন চালানো হবে। আর তারপর থেকেই ইউক্রেনের মাটিতে গুলি-বোমা বর্ষণ চলছে। এর জেরে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় আটকে পড়েছেন সেই দেশে। এই পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে হাওড়ার আন্দুল নিবাসী সৌরভ দে-র স্ত্রী ইরিনার। তাঁর বাপের বাড়ি ইউক্রেনে। খবর পেয়েছেন, সেখানকার অবস্থা সাংঘাতিক। তারপর থেকেই বলছেন, ‘ইচ্ছে করছে উড়ে গিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে আসি।’
প্রসঙ্গত, ইরিনার স্বামী সৌরভ ইউক্রেনের তেরনোপিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পড়তে গিয়েছিলেন। ২০০১ সালের কথা। তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় ২০০৪ সালে তেরনোপিল শহরের বাসিন্দা ইরিনা প্রিতলিউকের সঙ্গে আলাপ। এরপরে প্রেম ও বিয়ে। ২০০৯ সালে বিয়ের পরে ইরিনা পাকাপাকি চলে আসেন হাওড়ায়। এই মুহূর্তে তিনি শহর কলকাতার দমদম পার্কের বাসিন্দা। পশ্চিম ইউক্রেনের তেরনোপিল এলাকায় তাঁর বাপের বাড়ি। তিনি জানান, ‘শুনলাম খাবার জলটুকুও নেই।’ তাঁর একমাত্র ভাই সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কালাশনিকভ নিয়ে যুদ্ধে নেমেছেন। আর কী ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হবে? জানেন না ইরিনা। তাঁর কথায়, ‘বছর তিনেক সামরিক বাহিনীতে কাটিয়ে সদ্যই বাড়ি ফিরেছিল। ঠিক যখন ভাবছিলাম সব শান্ত হয়ে গিয়েছে আবার অশান্তি শুরু। সরকারি নির্দেশে ভাই ছুটে গিয়েছেন বন্দুক হাতে।’ খ্রিস্টান হলেও বাঙালি ঘরের হিন্দু রীতি রেওয়াজ সব মানেন ইরিনা। শাশুড়ি মা তাঁকে লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়া শিখিয়েছেন। ইরিনার কথায়, ‘পরিবারের মঙ্গল কামনায় বারবার পাঁচালি নিয়ে বসে পড়ছি।’