করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং গোয়ার নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোটের দামামা যখন বেজে গিয়েছে, তখন দলত্যাগের হিড়িক পড়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ বিজেপিতে। এরই মধ্যে এবার ভোটের আগে ওবিসিদের ভিত্তি রক্ষা করাটাই বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন, বিজেপি সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির সহযোগী সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির নেতা ওপি রাজভর। আগামী দিনে আরও বিজেপি নেতা দল ছাড়বেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
নিজের তিনবছর আগে বিজেপির জোট ছাড়ার কথাও উল্লেখ করেছেন ওপি রাজভর। তিনি বলেন, সেই সময়ই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বিজেপি ওবিসি এবং দলিতদের শত্রু। এবার স্বামীপ্রসাদ মৌর্য এবং দারা সিং চৌহানও বিজেপি ছেড়ে সেই কথাই বলছেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। যদি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে লুকনো ক্যামেরায় কথা বলেন, তাহলেও তারা একথাই বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিজেপিতে ওবিসিদের কথা শোনার মতো কেউ নেই। বিজেপির ফলাফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন ফল প্রকাশের দিন কোনও বিজেপি নেতাই ঘর থেকে বেরোতে পারবেন না। তাঁদেরকে টিভির সুইচ অফ করে বসে থাকতে হবে।
২০২০-র ডিসেম্বরে ৬৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সেই নিয়োগে ওবিসিদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। এই নিয়োগে নজর রেখেছিল ন্যাশনাল কমিশন অফ ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসও। সেখানে ২৭ শতাংশ ওবিসিকেও নিয়োগ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ওই নেতা। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু তারপরেও সেই নিয়োগের মধ্যে কেন ৬ হাজারের বেশি ওবিসিকে নিয়োগ করা যায়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই নেতা।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে ওবিসিদের মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে অসন্তুষ্টি সামাল দিতে ক্যাবিনেটে রেকর্ড সংখ্যায় মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব মন্ত্রীকে নির্বাচনী মন্ত্রী বলে কটাক্ষ করা হয়েছে বিরোধীদের তরফে। বিজেপির তরফে ভোট জোগারে তাঁদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে বলেও কটাক্ষ বিরোধীদের। দলত্যাগী ওবিসি নেতারা বলছেন, বিজেপি দেরি করে ফেলেছে। এখন আর কিছুই হবে না। কারণ নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এইসব নেতারা বলছেন, আগামী ২৮ বছরে উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় বিজেপিকে দেখা যাবে না। যদি গ্রামে যাওয়া যায়, তাহলে দেখা যাবে কৃষকরা ক্ষুব্ধ। যুবকরা ক্ষুব্ধ বেকারত্ব নিয়ে। ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ জিএসটি নিয়ে। জনমত সমীক্ষায় বিজেপি অন্তত ২০০ আসন পাওয়ার কথা দেখানো হলেও ওবিসি নেতারা বলছেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসতেই পারবে না।