টানা ৫ দিন ধরে লাগাতার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বাঘে-মানুষের লুকোচুরি খেলা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। সুন্দরবন লাগোয়া কুলতলির জঙ্গলে কোথায় যে ঘাপটি মেরে রয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, তা এতক্ষণে বুঝে ফেলেছেন বনকর্মীরা।
সেইমতো অবস্থান নির্ণয় করে ‘বাঘমামা’কে খাঁচাবন্দি করার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনও অধরা দক্ষিণরায়। যদিও বাঘের সঠিক অবস্থান জেনে জালে আনার সবরকম প্রস্তুতি নেওয়ার পর বনকর্মীদের আশা, আজকের মধ্যেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ধরা পড়বে।
রবিবার বাঘের আতঙ্কে জঙ্গল থেকে পালাতে গিয়ে পড়ে জখম হয়েছেন একজন। শুক্রবার থেকে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে লোকালয়ে। সেদিন থেকেই তাকে ধরতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বনকর্মীরা। এখন অপেক্ষা, কখন তা ক্লান্ত রয়্যাল বেঙ্গল পাতা ফাঁদে পা দেয়। গ্রামবাসীরা এখনও আতঙ্কে। তবে বনদপ্তরের নিষেধ মেনে খুব একটা শোরগোল তুলছেন না। কারণ, কোনওরকম শব্দই বাঘ ধরার পক্ষে একেবারেই প্রতিকূল।
কুলতলিতে লোকালয় লাগোয়া জঙ্গলেই বিচরণ করছে বাঘ। এমনটা বোঝা গিয়েছিল। সেইমতো বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জাল পাতা হয়েছিল। খাঁচাবন্দি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘুমপাড়ানি গুলি, মাচা বেঁধে উপর থেকে নজরদারি – সবরকম প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছিল। তবে বাঘ বারবার উঁকি দিয়েও ধরা পড়ছিল না কিছুতেই। সোমবার সকাল থেকে তাই নতুন করে ফের তল্লাশি শুরু করেন বনকর্মীরা।
তাতেই দক্ষিণরায়ের সঠিক অবস্থান জানতে পারেন বলে দাবি তাঁদের। জঙ্গলের তিন কিলোমিটারের মধ্যেই রয়্যাল বেঙ্গলটি লুকিয়ে রয়েছে বলে নিশ্চিত বনদপ্তর। এই ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নতুন করে জাল পাতা হয়। পাশাপাশি গাছের উপর মাচা বেঁধে পাহারা দিতে থাকেন বনকর্মীরা।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, বাঘকে জালে আনার জন্য যে নীরবতা এবং নিখুঁত পরিকল্পনা প্রয়োজন, তা রয়েছে। ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে প্রস্তুত বনদপ্তরের ২ টি আলাদা টিম। চারপাশে নীরব পরিবেশও রয়েছে। ফলে খিদের টানে লোকালয়ের কাছাকাছি এলেই বাঘটি জালে ধরা পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। জালে টোপ হিসেবে ছাগল রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, এদিন সকালেও বাঘের তর্জন-গর্জন শোনা গিয়েছে।