দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের তরফে এক গুচ্ছ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সারা বছর ধরে নানান কর্মসূচী পালন করা হবে। এই অনুষ্ঠানগুলির রূপরেখা ঠিক করতে আজ নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতি মানুষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন,নেতাজী সংক্রান্ত এবং বাংলার বিধানসভায় স্বাধীনতা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ডিজিটালভাবে প্রকাশ করা হবে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা আর্কাইভে স্বাধীনতা বিষয়ক যে সব তথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সেগুলিকে এক জায়গায় করে ডিজিটাল ভার্সনে প্রকাশ করারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, আগামী বছর রেড রোডে বিশ্ব সঙ্গীত মেলা আয়োজন করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান হবে, যার দায়িত্বে থাকবেন অজয় চক্রবর্তী। ২৬শে জানুয়ারি ও ১৫ই আগস্ট বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করবে রাজ্য সরকার। প্রতি বছরের মতোই রাজ্য সরকারের তরফে মহাসমারোহে নেতাজীর জন্মদিবস পালন করা হবে। এদিনে বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান মহাত্মা গান্ধীর নামে তমলুকে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হতে চলেছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠকে থাকছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এদিনের বৈঠক চলাকালীন মুখ্যসচিবকে একথা জানিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব বিষয়টি দিল্লীতে জানিয়ে দেবেন বলেই জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল বিভিন্ন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ডাকা প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। যোগেন চৌধুরী, জয় গোস্বামী-সহ আজকের বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাম্রলিপ্ত সরকারের ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তমলুকে একটি অনুষ্ঠান হবে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের দিন যুব দিবস উপলক্ষ্যে ময়দান থেকে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে একটি দৌড় আয়োজন করা হবে। এছাড়াও স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আগামী ২৩শে জানুয়ারি সকাল ১১.৩০ মিনিটে একটি জমায়েত হবে। রেড রোডে নেতাজী মূর্তির কাছ থেকে এই পদযাত্রা বেরোবে, ছাত্র-ছাত্রী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা-সহ ঐ পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শ্যামবাজারের নেতাজী মূর্তির পাদদেশ পদযাত্রাটি শেষ হবে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সাইরেন বাজানো হবে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে। ২৩শে জানুয়ারি থেকে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত এলইডি আলোয় সাজিয়ে তোলা হবে শহরের বিভিন্ন মনীষীদের মূর্তি। আলিপুর জেলের দেওয়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস নিয়ে পেইন্টিং করা হবে। যার দায়িত্বে রয়েছেন যোগেন চৌধুরী। আলিপুর জেলেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐতিহ্যকে নিয়ে একটি স্থায়ী প্রদর্শনী তৈরি করা হবে বলেও এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্য সারা বছর জুড়েই নিজ উদ্যাগে নানান অনুষ্ঠান আয়োজন করবে রাজ্য সরকার।
