এনআরসি, এনপিআর, সিএএ, নিজেদের এই তিন অস্ত্রে নির্বাচনী ময়দানে নিজেরাই ঘায়েল হয়েছে পদ্মশিবির। বিরোধী দলগুলি বিরোধী ভোটকে সুসংবদ্ধ করতে, হাতিয়ার করছে এনআরসি ইস্যুকে। নানান রাজ্যে ভোটে মুখ থুবড়ে পরে, বিজেপি আপাতত পিছু হটেছে এনআরসি থেকে। তবে ঘুরপথে কোনো ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করছে না তো মোদী সরকার? কারণ, এরই মধ্যে ঝুলি থেকে এক নতুন বিড়াল বের করেছে বিজেপি। নির্বাচনী সংশোধনী আইন এনেছে বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যেই বিলটি সংসদে পাশ গিয়েছে। গতকাল বিলের আলোচনায় প্রায় সব বিরোধী সাংসদেরা এই বিলের বিরোধিতা করেছেন। এই নয়া বিল অনুযায়ী, দেশের নাগরিকদের আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ করা হবে। এখানেই লুকিয়ে রয়েছে এক নতুন ছলের আভাস। যা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। নাগরিকদের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর সবই সংযুক্ত রয়েছে আধার কার্ডের সঙ্গে, ভোটার আর আধার কার্ড সংযুক্তির জন্য এই সব তথ্য সহজেই পেয়ে যাবে বিজেপি সরকার।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই নানান সময়ে ধাপে ধাপে সুপরিকল্পিতভাবে দেশবাসীর সমস্ত তথ্য আধার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করিয়েছে বিজেপি। মোবাইল নম্বরের সঙ্গেই সকলের সব রকম সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করা থাকে। ফলে এই বিল এনে সরকার দেশবাসীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নজরদারি চালাতে চাইছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম কে, কেমন, কী পোস্ট করছেন তাও নজরে রাখবে দেশের বিজেপি সরকার। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ভিত্তিতে, কার কী রাজনৈতিক মতাদর্শ রয়েছে তাও অনুধাবন করবে সরকার। স্পষ্ট কথায় কে কী রাজনৈতিক দল করেন তা দেখতে চাইছে বিজেপি। বলাইবাহুল্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা বিজেপির বিরুদ্ধে সরব, তাদেরকে চিহ্নিত করতে চাইছে বিজেপি সরকার। এটা যেমন মানুষের মত প্রকাশের স্বধীনতায় হস্তক্ষেপ তেমনই বিরোধীমনস্কতাকে কণ্ঠরোধের চেষ্টা। যারা বিজেপির বিরুদ্ধে সরব, হয়ত তারা একদিন দেখবেন তাদের নাম আর দেশের ভোটার তালিকায় নেই। বিরোধীহীন ভারতের স্বপ্ন সফল করতে এবং দেশের নাগরিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে ঠেলে দিতে নিত্যনতুন ফন্দিফিকির আনছে বিজেপি। তারই এক নবতম সংস্করণের এই আধার-ভোটার কার্ড সংযুক্তিকরণ। এমনই মত রাজনৈতিক মহলের।
