করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশের যে সব রাজ্যে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম উত্তরপ্রদেশ। সেই সময় জানা গিয়েছিল, দিল্লীর মতোই যোগীরাজ্যে হাসপাতালে বেড ও অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে মৃত্যুমিছিল নেমেছে। কিন্তু এবার সংসদে উত্তরপ্রদেশ সরকারি দাবি করল, করোনা আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হলেও তাঁদের কেউ অক্সিজেনের অভাবে মারা যাননি! বিরোধীরা পাল্টা দাবি করেছে, এই দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন।
ঠিক কী জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয়প্রতাপ সিং? তিনি কংগ্রেস সাংসদ দীপক সিংয়ের একটি প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে দেন, ‘দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় রাজ্যে অক্সিজেনের অভাবে কোনও মৃত্যুর ঘটনার রিপোর্ট নেই’। তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে দীপক বলেন, সেই সময় বহু নেতা-মন্ত্রীরাই চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে বহু মৃত্যুর ঘটনাই প্রকাশ্যে এসেছিল। তাঁর কটাক্ষ, ‘তাহলে গোটা রাজ্যের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনও খবর থাকল না কেন? সরকার কি দেখেনি কীভাবে গঙ্গায় মৃত মানুষের সারি ভেসে যাচ্ছিল? কীভাবে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা গিয়েছিল’?
এই বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রতাপের সাফাই, সেই সময় রাজ্যে যে ২২ হাজার ৯১৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের কারও ডেথ সার্টিফিকেটেই ‘অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু’ এই কারণ লেখা নেই। যেহেতু রোগীমৃত্যুতে চিকিৎসকের বয়ানই একমাত্র গ্রহণযোগ্য, তাই সেকথা মানলে বলতেই হবে উত্তরপ্রদেশে কেউই ওই সময় অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে মারা যাননি।
কিন্তু তাঁর এমন ব্যাখ্যার বিরোধিতা করে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ উদয়বীর সিং দাবি করেন, রাজ্যের পরস হাসপাতালে সরকার এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল। কেননা একটি ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গিয়েছিল, কীভাবে ওই হাসপাতালে অর্ধেক রোগী অক্সিজেন পেয়ে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছেন। একই ভাবে অর্ধেক রোগী অক্সিজেন না পেয়ে অসহায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তাঁর অভিযোগ, এভাবে ‘ভুয়ো তথ্য’ দিতে পারে না সরকার।