একদা পরিকাঠামোর হাল ছিল তথৈবচ। অতীতে ৩০ দিনে শ’খানেক মানুষের পা পড়ত কি না, তাও ছিল সন্দেহের বিষয়। সেখানে এখন মাসে গড়ে কমপক্ষে এক হাজার রোগীর দেখা মিলছে রাজ্যের প্রতিটি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। খোদ স্বাস্থ্যদপ্তরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় উঠে এল এই তথ্য। রিপোর্ট বলছে, গত একবছরে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির জনপ্রিয়তার গ্রাফ একধাক্কায় পাহাড় চড়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে জনমুখী করার উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অগ্রসর হয়েছে পরিষেবাও। তার সুফল এই জনপ্রিয়তা। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, সরকারি সমীক্ষায় সব কিছুকে ভালো বলে দেগে দেওয়া হয়নি। পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবার ত্রুটিও উল্লেখ করা হয়েছে। যার অন্যতম, ওষুধের অমিল এবং সময়ে রিপোর্ট না দেওয়া। নভেম্বর মাসের শেষে সেব্যাপারে পুরসভাগুলিকে তিরস্কার করেছেছে স্বাস্থ্যভবন। ফলে, আগামী দিনে এই সাফল্যের গ্রাফ যে আরও উজ্জ্বল হতে চলেছে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
উল্লেখ্য, প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই স্বাস্থ্য পরিষেবার পট পরিবর্তনের কাজে নেমেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। একাধিক সুপার স্পেশ্যালিটি সহ অন্যান্য হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নতির সেই কাজ এখনও চলছে। সম্প্রতি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির ক্ষেত্রেও সেই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। বর্তমানে সেখান থেকে সুগার ও উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। পরিষেবা বাড়ায় আম জনতার ভরসাস্থল হয়ে উঠছে ওই চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি। স্বাস্থ্যভবনের সমীক্ষায় আস্থা ফেরার সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। চলতি বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসের নিরিখে তৈরি ওই রিপোর্ট বলছে, পরিষেবায় সবচেয়ে উপরে ঝাড়গ্রামের পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। সেখানে প্রতি মাসে গড়ে ৪২৩৪ জন করে রোগী এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলা। মাসে গড়ে ৩৮১৬ জনের চিকিৎসা হয়েছে। তৃতীয় স্থানে পশ্চিম বর্ধমান। সেখানে মোট ৩০টি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মোট ২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৮ জন রোগী এসেছে। অর্থাৎ, মাসিক গড় ২৯৯০ জন। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং দার্জিলিংয়ের জিটিএ এলাকার পুরসভা বাদে রোগী আসার নিরিখে সবথেকে পিছিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা। তাও সেখানে ৯৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে গড়ে ৮৫৭ জন ডাক্তার দেখিয়েছেন। সার্বিকভাবে গোটা রাজ্যের পুরসভাগুলির ক্ষেত্রে এই গড় ১৩১৭ জন। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর আস্থা ফিরছে সাধারণ মানুষের।