বিগত সময়ে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। পরে তার জন্য ক্ষমাও চান তিনি। কিন্তু দেশবাসী তাঁকে পুরোপুরি মাফ করতে পারেননি। তেমনই কৃষি আইন প্রত্যাহার করেও পার পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাণিজ্যনগরীতে সুশীল সমাজের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনই জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সমীকরণে বেঁধেছেন কংগ্রেস ও বিজেপির অত্যাচারকে। টেনেছেন জয়প্রকাশ নারায়ণের প্রসঙ্গ। রাজনৈতিক মহলের দাবি, তৃণমূল সুপ্রিমোর ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট। নিজের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানকেই তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। একদিকে স্পষ্ট বুঝিয়েছেন, বিজেপি তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ। তেমনই জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার প্রচ্ছন্ন উল্লেখও রেখেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের তিন কালা আইন বাতিলের দাবিতে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে আন্দোলন শুরু হয়। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সেই আন্দোলনের চাপেই আইনগুলি প্রত্যাহারে বাধ্য হয় মোদী সরকার। গত ১৯শে নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সেই ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ক্ষমাও চান দেশবাসীর কাছে।
বুধবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে ওয়াই বি চ্যবন সেন্টারে মুম্বইয়ের সুশীল সমাজের সঙ্গে আলাপে সেই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছেন মোদী। কিন্তু কেন? কারণ একটাই, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন। সবাই সেটা জানেন!” এরপরই পদ্মশিবিরের বর্তমান অবস্থানের প্রেক্ষিত টেনে বলেন, “ভাববেন না যে, ওরা (বিজেপি) খুব নিরাপদে আছে। আসলে ওরা ভীত, সন্ত্রস্ত! সবাই মিলে দেশকে নিরাপদে রাখতে হবে। সেটাই আশু কর্তব্য।” দেশের বর্তমান অবস্থাতেও আশার বাণী শোনা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। আশ্বাস দিয়েছেন, “চিন্তা করবেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে।” উল্লেখ্য, সাধারণ মানুষই যে দেশের বর্তমান এই অবস্থায় বদল আনবেন, সেব্যাপারে প্রত্যয়ী মমতা। সেই আত্মবিশ্বাসই তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন মুম্বইবাসীর মধ্যে। জানান, “কৃষি আইন প্রত্যাহার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেও, মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মাফ করবে না। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।”