কুয়াশা মাখা শীতের ভোর। যত্ত আলসেমি এই সময়েই উড়ে এসে জুড়ে বসে। ঘুমে চোখ জুড়িয়ে আসে গাড়ির চালকদের। তাতে বাড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোরের কলকাতায় বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির চালকদের চা খাওয়াচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকরা। কাগজের কাপে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ধোঁয়া ওঠা গরম চা।
মালবাহী চালকদের চোখে যাতে ক্লান্ত না আসে, তাই প্রত্যেকদিন নতুন ধরনের ‘অভিযান’ শুরু করেছেন ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকরা। তাঁরা চালকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার বদলে তাঁদের কাগজের কাপে করে গরম চা পরিবেশন করছেন। পুলিশের মতে, এর ফলে অনেকটাই চাঙ্গা হয়ে উঠছেন গাড়ির চালকরা। এভাবে চালকদের পাশে দাঁড়ালে রাতের শহরে পথ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে মত পুলিশের।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গভীর রাত বা ভোরে অনেক সময়ই গাড়ির চালকদের ঘুম পেয়ে যায়। একাধিক দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে নানা তথ্য পুলিশের সামনে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে চালক হয়তো সারাদিন ঘুমোননি।
আগের রাতেও তাঁকে গাড়ি চালাতে হয়েছে। বিশ্রামের অভাবে ঘুম আসতেই পারে। তাতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে গাড়ি। বিশেষ করে হাইওয়েতে। উদাহরণ হিসেবে লোকসংগীত শিল্পী কালিকাপ্রসাদ অথবা পুলিশকর্তা দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলা যায়।
কলকাতাতেও এমন ঘটনা ঘটে থাকে। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর শুধু চলন্ত গাড়িতে চালক ঘুমিয়ে পড়ায় কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় মোট ৩২ পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। আহত হয়েছেন ২৭ জন। সম্প্রতি গভীর রাতে নদিয়ায় মালবাহী গাড়ির দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।
কলকাতায় চালক ক্লান্ত থাকার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা ঘটেছে মালবাহী গাড়িতে। তাই উত্তর কলকাতার চিৎপুর, কাশীপুর, দক্ষিণ কলকাতার তারাতলা, বেহালা, পূর্ব কলকাতার বাইপাস, বাসন্তী হাইওয়েতে রাত ও ভোরে আরও সতর্ক হয়েছে পুলিশ।