সরকারের জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতে এবার এক নয়া পদক্ষেপ নেওয়ার পথে রাজ্য। নবান্ন সূত্রে খবর, শীঘ্রই বিভিন্ন দফতরে ‘বিশেষ সচিব’ নিয়োগ করতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রাথমিক ভাবনাচিন্তা। মুখ্যমন্ত্রীর চূড়ান্ত সঙ্কেত পেলে বিষয়টি নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতী পেশাদারদেরই ওই ‘বিশেষ সচিব’ পদে নিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, অতীতে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে রেলের শীর্ষপদে বেসরকারি ক্ষেত্রের পেশাদার নিয়োগ হয়েছে। ওই কর্তার কথায়, ‘এটা নতুন কিছু নয়। তবে এটাও ঠিক যে, বাংলায় এমন উদ্যোগ আগে নেওয়া হয়নি। কারণ, আগে এই ভাবে আগে ভাবাও হয়নি। প্রশাসনিক কর্তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। সেই জন্য অনেক সময়েই সাধারণ মানুষের কাছে কোনও প্রকল্পের পরিষেবা পৌঁছে দিতে বা সেই প্রকল্প রূপায়নের জন্য পেশাদারদের মতামত নিতেই হয়। তাতে প্রকল্পের গুণগত মান যেমন বাড়ে, তেমনই বাস্তবসম্মত হয়। সেই লক্ষ্যেই এই নিয়োগের ভাবনা।’ রাজ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা আগে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না অভিজ্ঞরাও। তাঁদের মতে, মমতার এই প্রয়াস তো অভিনব বটেই। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের সাধারণ মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার অভিমুখ আরও নির্দিষ্ট করার সদিচ্ছাও এর মধ্যে নিহিত রয়েছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার অন্তত ৩০টি দফতরে বিশেষ সচিব নিয়োগ করার কথা ভাবছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবদের অধীনেই কাজ করবেন ওই বিশেষ সচিবরা। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে রাজ্য মন্ত্রিসভা। নভেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপিত হলেও হতে পারে বলে নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে। বেসরকারি ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত পেশাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় বেতনের অঙ্ক অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, সরকারি হারের তুলনায় বহু বেসরকারি ক্ষেত্রেই বেতন বেশি মেলে। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, ওই বিশেষ সচিব পদে যোগ দেওয়ার জন্য পেশাদাররা যাতে আগ্রহ দেখান, তার জন্য তাঁদের বেতনের অঙ্ক নিয়ে রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তরে আলাপ-আলোচনা চলছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি আলোচিত হতে পারে। নবান্নের একটি সূত্রের দাবি, বিশেষ সচিবদের মাসে দু’লক্ষ টাকা বেতন দেওয়া হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি।