বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হেরে যাওয়ার পর ফের সক্রিয় হয়ে উঠল আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। বিধানসভা নির্বাচনের সময় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, আরএসএস থেকে প্রাপ্ত নির্দেশকে পাশে সরিয়ে রেখে নিজেদের মতো করে এগিয়েছেন বঙ্গবিজেপির নেতারা। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ভোটে ভরাডুবির পর আরএসএস নতুন স্লোগান তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য বিজেপির জন্য। স্লোগানটি হল, “নতুন কর্মী, নতুন নেতা।”
জানা গিয়েছে, বাংলায় বিজেপিকে বাঁচাতে হলে এই স্লোগানেই চলতে হবে বলে, নির্দেশ দিয়েছে সংঘ। বলা হয়েছে, যত বেশি সম্ভব বুথস্তর থেকে নতুন সদস্য তুলে আনতে হবে। এমনকী বুথস্তরের কমিটিগুলিতেও নতুনদের সামিল করতে হবে। না হলে সংগঠন তৈরি করা যাবে না। একুশের নির্বাচনের পর থেকে সংগঠন দ্রুত গতিতে ভাঙতে শুরু করেছে। তাই এটাই বিকল্প পথ। আর এই নতুনদের বয়স হবে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসে দেখা গিয়েছে, বরাবরই নবীন মুখকে সংগঠনে জায়গা দেওয়া হয়েছে। এখন আরও বেশি করে তা করা হচ্ছে। তাই আরএসএসের দাবি, বিজেপিকে বাংলায় জায়গা করতে হলে নতুন সদস্য তৈরি করতে হবে। আর তাঁদের নবীন প্রজন্মের হতে হবে। যদিও আরএসএসের এই নির্দেশ মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না বিজেপি নেতারা। ভিতরে ভিতরে জমা হচ্ছে অসন্তোষ।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে জলপাইগুড়িতে সংঘের সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে শাখা সংগঠনদের ডাকা হয়েছিল। এসেছিল বনবস্তি কল্যাণ পরিষদ, বিদ্যার্থী পরিষদ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বিদ্যাভারতী, একল স্কুল, মজদুর সঙ্ঘের মতো শাখা সংগঠন। এমনকী বিজেপি নেতারাও ডাক পান। আর সেই বৈঠকেই বিজেপির প্রতিনিধিদের একগুচ্ছ নির্দেশও দেওয়া হয়।
সূত্র অনুযায়ী, বরাবরই সংঘের থেকে বিজেপিতে নির্দেশ আসে। বিজেপির উপরতলার মাধ্যমে সেই নির্দেশ জেলা এবং বুথস্তরে পৌঁছয়। কিন্তু সভায় ডেকে সরাসরি নির্দেশ দেওয়া আগে ঘটেনি। একুশের নির্বাচনে পরাজয়ের পরে বিজেপি নেতাদের একাংশের কড়া সমালোচনা করেছিল আরএসএস। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতার দাবি, “সংঘ দলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হাতে তুলে নিতে চাইছে। এই নির্দেশের মাধ্যমে তা পরিষ্কার হয়ে গেল।”