২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা ভোটে একাই লড়বেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। রাজনৈতিক মহলে যাকে বলা হচ্ছে মমতা-মডেল। ২০১৭ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে বিধানসভা ভোট এবং ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে মায়াবতীর সঙ্গে জোট গঠন করে লড়াই করেছিলেন অখিলেশ। কিন্তু দু’বারই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বাংলার নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের পর অখিলেশ সর্বাগ্রে ঘোষণা করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে একা লড়াই করে বিজেপির জয়ের রথ আটকে দিয়েছেন, আগামীদিনে ঠিক সেই পথেই মমতা-মডেলকে সামনে রেখে দেশে বিজেপি বিরোধী মঞ্চ হওয়া প্রয়োজন। তাঁকে সামনে রেখে লড়াই করতে রাজি সমাজবাদী পার্টিও। এরপর অন্য কয়েকটি দলও সেই প্রস্তাব সমর্থন করেছে। এক সাক্ষাৎকারে অখিলেশ বলেছেন, আর কোনও জোট নয়। বিজেপির সঙ্গে সরাসরি তাঁর দল লড়াই করবে আগামী বছর। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে কোনও লাভ নেই। কারণ, কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল। সুতরাং অখিলেশের এই ঘোষণায় কংগ্রেসের বিপদ আরও বাড়ছে।
পাশাপাশি যদিও তিনি সাফ জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় কিছু দলের সঙ্গে জোট করতে তাঁর আপত্তি নেই। এই তালিকায় যে প্রধানত দলিত ও অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করা দলই থাকবে সেটা স্পষ্ট। ঘটনাচক্রে অখিলেশ যখন এই ঘোষণা করেছেন, তখনই রাজ্যে বিজেপির জোটসঙ্গী নিষাদ পার্টি দাবি করেছে, তাদের দলের সভাপতিকে এবার উপমুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। ভোটের আগের বছরই এই দাবি করে নিষাদ পার্টি রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে দলকে চাঙ্গা করতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, উত্তরপ্রদেশে দলকে এককভাবে শক্তিশালী করাই তাঁর লক্ষ্য। এবার কংগ্রেসকে একা লড়াই করতে হলে রাজ্যে যথেষ্ট হীনবল হতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, এখনও কোনও ভোটেই কংগ্রেসের শক্তিবৃদ্ধির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বছর বিহারে তেজস্বী যাদব কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই নির্বাচনে লড়াই করেন। কিন্তু ভোটের ফলাফলের পর দেখা যায় কংগ্রেস অনেক বেশি আসনে লড়াই করে মাত্র সামান্য কিছু আসনে জয়ী হয়েছে। বরং তেজস্বী যাদব ওইসব আসনে একা লড়াই করলে বিজেপি চাপে পড়ে যেত। পশ্চিমবঙ্গেও কংগ্রেস শূন্য। দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসকে জোটশরিক হিসেবেও আর পেতে চাইছে না আঞ্চলিক দলগুলি। উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের দল বিজেপির তুলনায় অনেক বেশি আসনে জয়ী হয়েছে। তাই আগামী বিধানসভা ভোট নিয়ে সমাজবাদী পার্টি স্বভাবতই আত্মবিশ্বাসী। সেই বিশ্বাস থেকেই অখিলেশ বুধবার আরও ঘোষণা করেছেন, উত্তরপ্রদেশে আগামী বছর গদি হারাতে চলেছে বিজেপি।