খুব শীঘ্রই, হয়তো দু-একদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে। এই রদবদলে কারা জায়গা পাবেন, কীসের ভিত্তিতে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম উঠে আসবে তাই নিয়ে জল্পনা চরমে। ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত মিলেছে, ম্যারাথন বৈঠক করছেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উত্তরপ্রদেশ ছুটে গিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। মোদি কথা বলেছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডাদের সঙ্গেও। বাংলার প্রচারমাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা কারা এই নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন তাই নিয়ে । মুখে মুখে ঘুরছে একাধিক নাম। কিন্তু সূত্রের খবর. চর্চা যেমনই হোক হাতে পড়ে থাকবে হয়তো পেন্সিল। রাজ্যের দু-একজন নেতাদের ভাগ্যে জুটতে পারে বড়জোর রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ, কারণ কেন্দ্রের ফোকাস আপাতত বাংলা নয়।
এই তত্ত্ব নিছক জল্পনা যে নয়, তা বোঝাতে রাজনৈতিক মহলের গূঢ় ব্যাখ্যাও উঠে আসছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কমতে না করতেই মোদি চাইছেন মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটাতে। এনডিএ-এর প্রথম দফায় এক বছরের মধ্যেই এই রদবদল ঘটিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় করোনার কারণে সেই সুযোগ পাননি তিনি। এদিকে সামনেই এক যোগে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গুজরাট, গোয়া, মনিপুর, পাঞ্জাবে ভোট রয়েছে। বিজেপির অন্দরের খবর তাই বাংলা নয় এই রাজ্যগুলির ভোটকে মাথায় রেখেই রদবদল হতে পারে। যেমন উত্তরপ্রদেশের তফশিলি ভোটের কথা মাথায় রেখে তথাকথিত নিচুতলার গোষ্ঠী থেকে প্রতিনিধি তুলে আনা হতে পারে। এক কথায় বললে, ভোট মিটে যাওয়ার বাংলা নয় বিজেপি মনোনিবেশ করতে চাইছে ভোট আসছে এমন রাজ্যগুলিতেই।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তাহলে কি ভোট মিটে গিয়েছ এই কারণে বাংলার যোগ্য নেতারা বঞ্চিত হবেন। সূত্রের খবর, এমনটা বার্তা যাক তা কখনও চায় না শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে বিজেপি এখানেও সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্র্যাটেজি খাটাতে পারে। অর্থাৎ এমন কোনও ব্যক্তি সংসদে যেতে পারেন যিনি মতুয়া বা রাজবংশী জনজাতির প্রতিনিধি। তিনি হয়তো বড় সংগঠক নন, কিন্তু পরবর্তীকালে এই প্রতিনিধিত্বই ডিভিডেন্ট দিতে পারে, এমনটাই মাথায় রাখছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, রদবদলের আগে রিপোর্টকার্ড পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করছেন মোদী স্বয়ং। আর সেই রিপোর্টকার্ডে খুব ভালো জায়গায় নেই বাবুল সুপ্রিও, দেবশ্রী চৌধুরীরা। কাজেই তাদের এই নতুন মন্ত্রিসভায় ঠিক কী ভূমিকায় দেখা যাবে এরপর তাই নিয়ে জল্পনা রয়েছে। বরং দিলীপ ঘোষকে নিয়ে চর্চা অনেক বেশি। বাংলায় বিজেপি ধরাশায়ী হলেও আজ সংগঠন যে জায়গায় পৌঁছেছে তাতে দিলীপ ঘোষের অবদান স্বীকার করে বিজেপির উপরমহল। কাজেই ভোটে হারের দায় তাঁর উপর বর্তায় না। অন্য দিকে এই নভেম্বরেই তাঁর সভাপতিত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কাজেই খবরের দুনিয়ায় চাউর, তিনি এবার মন্ত্রিত্বের দাবিদার।
তবে বাংলা যে কেন্দ্রের অগ্রাধিকার নয় তা বোঝা যাবে আরও একটি জায়গা থেকে। বিজেপিতে এসেই মধ্যপ্রদেশে ঝড় তুলেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। সংসদে জায়গা দিতে হলে তাঁকে আগে দিতে হবে। পদ দিতে হবে আরেক যোগ্য দাবিদার অসমের ভূতপূর্ব মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে। সূত্রের খবর বিজেপিকে জায়গা দিতে হবে জনতা দলের দুজনকেও। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ঢাকঢোল বাজিয়ে বাংলার নেতারা দিল্লী গেলেও যে খুব কাজের কাজ হবে না তা একরকম স্পষ্টই। তবে শেষ পর্যন্ত কারা দিল্লী থাকেন, কাদের ভাগ্যের শিঁকে ছেড়ে এই নিয়ে আগ্রহ অটুট থাকবে আগামী কয়েক দিন।