গত বুধবার নিউটাউনে এসটিএফের গুলিতে নিহত হয়েছে পাঞ্জাবের ২ দুষ্কৃতী। অথচ সাপুরজি আবাসনের সুখবৃষ্টি ফ্ল্যাটটি তাদের কারও নামেই ভাড়া নেওয়া হয়নি। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল ‘সুমিত কুমার’ নামে। তদন্তকারী অফিসারদের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আসলে ওই নামে যে আধার কার্ড, প্যান কার্ড-সহ অন্যান্য পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছিল সেগুলি প্রত্যেকটি ভুয়ো। যে সেই পরিচয় দিয়েছিল, তার আসল পরিচয় ভরত কুমার। তিনি হরিয়ানার রোহতকের বাসিন্দা। তার কাছ থেকেই পাওয়া যায় ভাড়ার চুক্তিপত্র। তাকে গ্রেফতার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ।
জেরায় ধৃত ভরত জানিয়েছে, গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লারের সঙ্গে যোগাযোগ তার অনেকদিনের। অনিল দুগ্গার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল ভরতের। তার মাধ্যমেই সাপুরজির ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন ভরত কুমার। পরিচয়পত্রের নথি নকল করায় আগে থেকেই হাত পাকিয়েছিল ভরত। এমনকী ঘোল খাইয়েছে কলকাতা পুলিশকেও। ফ্ল্যাট নেওয়ার আগে নিউটাউনের একটি হোটেলে উঠেছিল ভরত কুমার। জয়পাল ও তার সঙ্গী জসসি ছিল নিউটাউনেরই অন্য একটি হোটেলে।
এরপর সাপুরজির ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে জয়পালদের তুলে দিয়ে ২ জুন পাঞ্জাবে ফিরে যায় ভরত কুমার। কিন্তু কলকাতা পুলিশের এসটিএফের নিখুঁত অপরেশনে দুই মোস্ট ওয়ানটেড গ্যাংস্টারের খোঁজ মিলতেই সবকিছু পরিস্কার হতে শুরু করে। অন্যদিকে রাতে সাপুরজির ওই ফ্ল্যাটের মালিককে জেরা করেছে পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটের মালিক আকবর আলি পুলিশকে জানিয়েছে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই ভাড়া দিয়েছিলেন তিনি। ভাড়াটিয়ার তথ্য পুলিশকে ভেরিফিকেশনের জন্য দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ওই ফ্ল্যাটের মালিক।
যে দালালদের মাধ্যমে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা, তাদের মধ্যে একজনের কথায়, ২২ মে ভরত কুমার সশরীরে এসে ফ্ল্যাট দেখে গিয়েছিল। ফ্ল্যাট পছন্দ হওয়ায় অগ্রিম দিতেও ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। নিজেকে হরিয়ানার এক গাড়ি ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিল। পরের দিন সে যাবতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে ৪০ হাজার টাকা মালিককে দিয়েছিল। ১০ হাজার টাকা দিয়েছিল দালালকে। ওই দিনেই তৈরি হয় চুক্তিপত্র, তাতে মালিক সই করার পরই একটি কপি ভরত ওরফে ‘সুমিত কুমার’কে দেওয়া হয়েছিল।