গতকালই রাজ্যের উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় যশ। আর তারপরেই আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের তরফে ত্রাণের জন্য ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হল। এদিন নবান্নে যশ নিয়ে রিভিউ মিটিং করার সময় সমস্ত দফতরের আধিকারিকদের থেকে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিয়ে এমনটাই ঘোষণা করেছেন মমতা।
তিনি জানিয়েছেন, এই অর্থ মূলত চাষের জমির পুনরুদ্ধার, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির পুননির্মাণ ও মেরামতি কাজে, ত্রাণের চাল, ডাল ও ত্রিপল দিতে ব্যবহার করা হবে। ৩ থেকে ১৮ জুন দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, টানা প্রায় দু’দিন নিজে নবান্নের কন্ট্রোলরুমে থেকে ক্ষয়ক্ষতি কতটা, তা দেখে বুঝে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও খুব দ্রুত করে ফেলতে সক্ষম রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেব দেখালেন, সবমিলিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
‘যশ’-এর তাণ্ডব মোকাবিলায় ‘দুয়ারে সরকার’-এর আদলে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। কীভাবে ত্রাণ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে, তা আজ বিস্তারিত জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩ থেকে ১৮ জুন ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবিরে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন নেওয়া হবে। এবার আর কারও মাধ্যমে নয়, যিনি ক্ষতিগ্রস্ত, তিনি সরাসরিই আবেদন জানাতে পারবেন। এরপর ১৯ থেকে ৩০ জুন- এই সময়ে আবেদনগুলি খতিয়ে দেখা হবে। তারপর ১ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাবেন।
প্রসঙ্গত, মমতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিপর্যয় কাটলেই সবচেয়ে দ্রুত উদ্ধারকাজ, ক্ষতিপূরণের কাজ শুরু হবে। সেইমতো ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বস্ত এলাকা সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে এবং ক্ষতিপূরণে কাজ শুরুর ব্লু-প্রিন্ট ছকতে শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতরের সচিবদের থেকে ক্ষতির খতিয়ান নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১.১৬ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। তার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ২০০০ কোটি টাকা।