শক্তি হারাল ‘যশ’। উড়িষ্যার বালাসোরের দক্ষিণ ও ধামরার উত্তরে আছড়ে পড়ার পরেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল হল এই ঘূর্ণিঝড়। মঙ্গলবার রাতে শক্তিশালী থেকে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল এই সাইক্লোন। এপ্রসঙ্গে মৌসম ভবনের বুলেটিন জানাচ্ছে, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ওড়িশার উত্তর উপকূলে ল্যান্ডফলের পরে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়েছে ‘যশ’। বালাসোর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের দূরত্ব এখন ১৫ কিলোমিটার উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমে। ‘যশ’-এর বর্তমান অবস্থান উড়িষ্যার উত্তর উপকূল থেকে ২১ ডিগ্রি ৪৫ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৬ ডিগ্রি ৮ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে।
আবহাওয়া দফতর বলছে, আগামী তিন ঘণ্টায় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে বাঁক নেবে ঘূর্ণিঝড়। সেই সময় শক্তি আরও কমার সম্ভাবনা আছে। উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড়। সেই সময় হাওয়ার বেগও কমবে। চাঁদবালি ও ধামরার মাঝে ল্যান্ডফলের সময় ঝোড়ো হাওয়ার বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ১৫৫ কিলোমিটার (গাস্টিং)। শক্তি হারানোর পরে হাওয়ার বেগ হয়েছে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। বুধবার মধ্যরাতের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে যাবে ‘যশ’। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি ও হাওয়ার বেগ বাড়তে পারে। ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সতর্কতা জারি হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম সিংভূমে।
তবে উল্লেখ্য, গাঙ্গেয় উপকূল থেকে ঘূর্ণিঝড় বিদায় নিলেও এর রেশ থাকতে পারে বলেই মনে করছেন আবহবিদরা। কারণ আজ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ আছে। রাতের দিকে ফের ভরা কোটাল হবে। তখন সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতা বাড়তে পারে। বালাসোর, ভদ্রকে স্বাভাবিক ঢেউয়ের উচ্চতার ওপরেও ২-৩ মিটার জলোচ্ছ্বাস হবে। দুই মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এর প্রভাব পড়বে। ৫ মিটার অবধি ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জলোচ্ছ্বাস হবে ২ মিটার অবধি। তাছাড়া ভারী বৃষ্টি হতে পারে ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলী ও কলকাতায়। ভারী বৃষ্টি হবে নদীয়া, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমে। এই জেলাগুলিতে কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। এছাড়া মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও অতি ভারীর বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। আগামীকাল ২৭ তারিখে পাহাড়ের জেলাগুলিতেও অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। দার্জিলিং, দিনাজপুর, কালিম্পং, জলপাইগুড়িতে তুমুল বৃষ্টির পূর্বাভাস জানিয়েছে হাওয়া অফিস।