দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয়। আর তার জেরে রোজই রেকর্ড হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুমিছিল। ভারতের এ হেন ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি দেখে বেশ কিছুদিন ধরেই মোদী সরকারকে তুলোধনা করছে ল্যানসেট, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান, সিএনএন, দ্য ইকোনমিস্ট-এর মতো বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলি। সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এমনকী আরএসএস নেতাদের মুখেও। মোদী সরকারের এই সমালোচকদের তালিকায় এবার নাম লেখালেন শতাধিক প্রাক্তন আমলা। তাঁদের দাবি, মহামারীর কবলে দেশে মৃত্যুমিছিল। আর এসবের মধ্যেও নজিরবিহীন গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে কেন্দ্র। সরকার বরং ব্যস্ত নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায়।
মোট ১১৬ জন আমলা কেন্দ্রকে লেখা এই চিঠিতে সই করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, দেশের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন বিদেশ সচিব শিবশংকর মেনন, প্রাক্তন ক্যাবিনেট সচিব কে এম চন্দ্রশেখর, দিল্লির প্রাক্তন গভর্নর নাজিব জং এবং প্রাক্তন স্বাস্থ্য সচিব কে সুজাতা রাও। চিঠিতে তাঁরা বলছেন, ‘এই মহামারী গোটা বিশ্বকে সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। আমরা জানি, ভারতও এর হাতে থেকে রেহাই পাবেন না। দেশে এখন মৃত্যুমিছিল, স্বজনহারাদের হাহাকার আমাদের, চিকিৎসার জন্য আর্তি। তবে, সেসবের থেকেও আমাদের বেশি বিব্রত করছে এ হেন সংকট মোকাবিলায় আপনার সরকারের গা-ছাড়া মনোভাব।’
এরপরই সরাসরি কেন্দ্রের মানসিকতাকে বিঁধেছেন আমলারা। তাঁরা বলছেন, ‘আপনার সরকার তো মনে হচ্ছে আসল সমস্যা মোকাবিলা না করে কীভাবে করোনা মোকাবিলায় সরকারকে ‘উদ্যমী’ দেখানো যায়, সেই ভাবমূর্তি রক্ষার্থে ব্যস্ত।’ ওই চিঠিতে একাধিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ত্রুটি তুলে ধরেছেন আমলারা। যার মধ্যে কয়েকটি রীতিমতো মারাত্মক ট্রেন্ড। তাঁরা বলছেন, এই সরকারের আমলে মন্ত্রিসভার কার্যপদ্ধতির ‘অবক্ষয়’ হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কোনও ধরনের সমন্বয় চোখে পড়ছে না। বিশেষ করে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের বিরোধ প্রকাশ্যে। বিশেষজ্ঞ বা সংসদীয় কমিটির পরামর্শ এই সরকার নেয় না। আমলারা বলছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সমন্বয়ের অভাব এবং সময়মতো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নেওয়াটা ভয়ংকর বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে দেশকে।