সোমবার সকালেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁদের। সন্ধ্যায় জামিন। এবার নারদ কাণ্ডে আদালতে জোরাল ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সেইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে। এই ৩ জনের সঙ্গে তালিকায় ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। সোমবার দিনভর শুনানির পর, ধৃত ৪ জনেরই অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে বিশেষ সিবিআই আদালত।
প্রসঙ্গত, বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় ৪ জনেরই অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন। ৫০ হাজার টাকার বন্ডে তাঁদের জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যেতে পারে সিবিআই। সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে এই শুনানি চলে।কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল। আদালতে ধৃতদের পক্ষে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদ কাণ্ডে বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে কেন গ্রেফতার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি ধৃত ৪ জনের জামিনের আবেদন করেন। যদিও তার বিরোধিতা করে সিবিআই। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার আর্জি জানায়। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেখান, ধৃতরা বাইরে বেরিয়ে প্রমাণ নষ্ট করে দিতে পারেন। ধৃতদের আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দেখান, ফিরহাদ কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক। সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তাঁকে প্রয়োজন। অন্য দিকে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন নিয়েই প্রশ্ন তোলেন শোভনের আইনজীবী। তবে বিচারক সিবিআইয়ের তোলা প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। শুনানির শেষলগ্নে আদালতে চার্জশিটও জমা দেয় সিবিআই।
উল্লেখ্য, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া মন্ত্রী এবং জন প্রতিনিধিদের কী ভাবে গ্রেফতার করা হল, আদালতে সোমবার সেই প্রশ্নও তোলেন কল্যাণ। গ্রেফতারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কল্যাণের মন্তব্য, “রাজ্যপাল যা করেছেন পিছনের দরজা দিয়ে করেছেন।” কোভিড পরিস্থিতিতে গ্রেফতার নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথাও তুলে ধরা হয় আদালতে। আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “ন্যায় বিচার হল। আমরা আনন্দিত। আমরা আইনের রাস্তায় লড়েছি। সিবিআই যা বলেছিল তা সব বাজে কথা।”
এদিন দলীয় নেতাদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চলে যান নিজাম প্যালেসে। সূত্রের খবর, ওই ৪ জনের গ্রেফতারকে বেআইনি আখ্যা দেন তিনি। সেই সঙ্গে এ-ও বলেন, যত ক্ষণ না পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তিনিও নিজাম প্যালেস ছাড়বেন না। নিজাম প্যালেসে জড়ো হন বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও। অশান্তি ছড়ায় নিজাম প্যালেসে। সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে ভিড় থেকে পাথরও ছোড়া হয়। কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আদালতে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল।