আসামের নাগরিকপঞ্জি অর্থাৎ এনআরসি সম্পূর্ণ নয়। এর ফলে বরাক উপত্যকার হিন্দুরা সুবিচার পায়নি। বহুদিন আগেই এই অভিযোগ করেছিলেন সেসময়ের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এমনকী নিজেদের নির্বাচনী ইস্তাহারেও বিজেপি ঘোষণা করেছিল রাজ্যে ক্ষমতায় এলে নতুন করে এনআরসি করতে চায় তারা। আসামের কুর্সিতে বসে প্রতিশ্রুতি মতোই কাজ শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। রাজ্যে একপ্রকার নতুন করে এনআরসি করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেবশর্মা
প্রসঙ্গত, অসমের এনআরসি পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের মস্তিস্কপ্রসূত হলেও, এর পুরো প্রক্রিয়াটিই কার্যত বিজেপির আমলে সম্পূর্ণ হয়েছে। গত বছর ৩১ আগস্ট এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। যাতে বাদ গিয়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষের নাম। চূড়ান্ত তালিকায় ৩ কোটি ১১ লক্ষ ২১ হাজার ৪জন ঠাঁই পেয়েছেন। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ্যে আসার পর দেখা যাচ্ছে আসামের বাসিন্দা বহু হিন্দুর নামও এই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। বিশেষ করে বরাক উপত্যকার বহু হিন্দু বাসিন্দার নাম নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকায় নেই। আবার যাদের তথাকথিত অনুপ্রবেশকারী বলা হচ্ছে, এমন বহু মুসলিমের নাম তালিকায় ঢুকে পড়েছে। যা ভোটের আগে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় শাসকদল বিজেপির। ভোটের সময় তারা প্রতিশ্রুতি দেয়, ক্ষমতায় এলে এনআরসির তালিকা নতুন করে প্রকাশ করা হবে।
সেইমতো আবেদন করলেন হিতেশ। তাঁর করা আবেদনে বলা হয়েছে, ‘অসামের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকায় গুরুতর কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে গিয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা এবং সাপলিমেন্টারি তালিকা প্রকাশের পরও বহু ভুল ধরা পড়েছে। বহু অযোগ্য ব্যক্তির নাম তালিকায় ঢুকে পড়েছে। আবার অনেকে যোগ্য ব্যক্তির নাম এনআরসির তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে’। নিজের আবেদনপত্র হিতেশ বলছেন, আসামের এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় কিছু মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। পুরোপ্রক্রিয়ায় বহু অস্বচ্ছ্বতা ধরা পড়েছে। বংশলতিকা তৈরির ক্ষেত্রেও বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব কিছু মাথায় রেখে এনআরসির তালিকা আরও একবার খতিয়ে দেখার অনুমতি চেয়েছেন আসামের এনআরসির কো-অর্ডিনেটর।