দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে রোজই রেকর্ড হারে বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলিতে রোগীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের আকাল। সেই অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতেই রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে নিজস্ব অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে ‘প্রেশার সুইং অ্যাডসর্পশন’ (পিএসএ) মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট। হাসপাতালের পুরনো ভবনের কাছে জোরকদমে চলছে প্ল্যান্ট তৈরির কাজ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু’-এক দিনের মধ্যে এই অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র চালু হয়ে যাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার একমাত্র কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফলে স্বাস্থ্য জেলার অধীন ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপ মহকুমার করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু দিনদিন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও বাড়েনি অক্সিজেনের যোগান। কোভিড হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল মিলিয়ে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজে মোট কোভিড শয্যার সংখ্যা ১৬০। অধিকাংশ শয্যাতেই এখন রোগী রয়েছেন এখন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় সব করোনা আক্রান্তেরই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা রয়েছে। কিন্তু অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় উদ্বেগে আছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানাচ্ছেন, অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে দিনে ৩ বার করে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয় হাসপাতালে। ১৬০টি বি-সিলিন্ডার এবং ৮০টি ডি-সিলিন্ডার বোঝাই অক্সিজেনের জোগান থাকলেও রোগী আধিক্যের জেরে তা দ্রুতক ফুরিয়ে যায়। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে হাসপাতালের পুরোনো ভবনের কাছে তৈরি হওয়া ‘পিএসএ’ মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু হলে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১২০টি ডি-সিলিন্ডারে সমপরিমাণ অক্সিজেন পাওয়া যাবে। যা থেকে ঘাটতি অনেকটাই মিটবে বলে মত কর্তৃপক্ষের। প্ল্যান্ট থেকে পাইপ লাইন এনে জুড়ে দেওয়া হবে হাসপাতালের ম্যানিফোল্ড রুমে। আর সেখান থেকে গোটা হাসপাতালেই অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। এখন জোর কদমে প্ল্যান্টের পাইপ লাইন এবং বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলছে।