‘গোলকধাঁধায়’ হারিয়ে গিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সেই গোলকধাঁধা থেকে ‘কেষ্ট দা’কে খুঁজে পেল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে কমিশনের নজরবন্দি অনুব্রত। সেই নজরবন্দি অবস্থাতেই এদিন সকালে হঠাৎ উধাও হয়ে যান তিনি। সকাল ১১.৪০ মিনিটে বাড়ি থেকে বেরোনোর পরই কমিশনের র্যাডারের বাইরে চলে যান অনুব্রত। বোলপুর চৌরাস্তা থেকেই অনুব্রতর ট্র্যাক মিস করে কমিশনের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট ও ৮ জন আধা সেনার গাড়ি। এরপর আড়াই ঘণ্টা অনুব্রতকে খুঁজেই চলল কমিশন। এরই মধ্যে অনুব্রত সাঁইথিয়ায় দলীয় অফিসে বৈঠক করেন। এরপর যান তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে। সেখানেই তাঁকে ফের ‘খুঁজে’ পায় কমিশনের দল।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ৩০ এপ্রিল, শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ‘নজরবন্দি’ থাকার কথা বীরভূমের এই দাপুটে নেতার। কিন্তু বুধবার সকালেই ছন্দপতন। এদিন বাড়ি থেকে বেরোনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘উধাও’ হয়ে যায় অনুব্রতর গাড়ি। মঙ্গলবার কমিশন নজরবন্দি করার পরেও এক্কেবারে ভাবলেশহীন ছিলেন অনুব্রত। জানিয়েছেন, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ মেনে সম্ভবত এদিনই আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর অনুব্রতর আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার খবর নেই। তবে, নজরবন্দি হওয়ার পরও কথামতো , ‘খেলা’ শুরু করে দিয়েছেন অনুব্রত।
২৯ এপ্রিল অর্থাৎ আগামীকালই বীরভূমে নির্বাচন। অষ্টম অর্থাৎ শেষ দফা নির্বাচনে স্বাভাবিকভাবেই কমিশনের নজরে বীরভূম। তাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে অনুব্রতর জেলায়। তারই মধ্যে তাঁকে নজরবন্দির ঘোষণা করে কমিশন।
অবশ্য এর আগেও অনুব্রতকে নজরবন্দি করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই সময়ও কমিশনের দলকে ‘ঠকিয়ে’ প্রায় ঘণ্টাখানেক ঘুরে বেড়িয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। এবার সেই ঘটনাকেও মাত করে দিল। অনুব্রত ‘গায়েব’ হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই বীরভূমের প্রতিটি থানার ওসি’কে সতর্ক করে দিয়েছিল কমিশন। নজর রাখতে বলা হয়েছিল অনুব্রতর ‘গতিবিধির’ উপর। কিন্তু আড়াই ঘণ্টার টানটান ‘থ্রিলারের’ পর বলা যেতেই পারে, যতক্ষণ না অনুব্রত চেয়েছেন তাঁকে ‘খুঁজে’ পাওয়া যাক, ততক্ষণ পাওয়া যায়নি তাঁকে।