সোমবার উত্তরপ্রদেশে তৃতীয় পর্যায়ের পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয়েছে। আর এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে অথবা কোভিড–সন্দেহে মৃত্যু হয়েছে ১৩৫ জন শিক্ষক, শিক্ষা মিত্র এবং নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত তদন্তকারী আধিকারিকদের। মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নোটিশ জারি করে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (ইউপিএসইসি) প্রশ্ন করা হয়েছে যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের একাধিক পর্যায়ে কোভিডের নির্দেশনা অমান্য করতে কেন ব্যর্থ হয়েছিল তারা।
আদালতের পক্ষ থেকে এও প্রশ্ন করা হয় যে কেন এর বিরুদ্ধে এবং আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এবং কেন কোভিড বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত নয়। বিচারপতি সিদ্ধার্থ বর্মা ও অজিত কুমারের ডিভিশনাল বেঞ্চ ইউপিএসইসিকে নির্দেশ দেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাকি পর্যায়গুলিতে যাতে কোভিডের যথাযথ নিয়ম মানা হয় তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করুন অন্যথায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উত্তরপ্রদেশের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বকারী বহু সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ থেকে ফিরে এসে কমপক্ষে ২০০ জন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ২ হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শিক্ষক সমিতিদের পক্ষ থেকে আলাদা করে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ২ মে ভোট গণনার পদ্ধতি স্থগিত রাখতে বলার আবেদন করা হয়েছে। সমিতিদের মধ্যে এক সমিতি জানিয়েছেন যে গ্রামীণ এলাকায় শেষ পর্যায়ের ভোট বাতিল করে দেওয়া হোক কারণ মহামারির মধ্যে বহু মানুষ ভোটকেন্দ্রে ভিড় করবে এবং অনেকেই মারা যাবেন। শিক্ষক সমিতিগুলি প্রতিটি জেলায় মৃত্যুর রিপোর্ট দেয় এবং মৃত পরিবারদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। শিক্ষকদের সংস্পর্শে আসা ৪০০-রও বেশি পরিবারের সদস্যরাও মারা গিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় শিক্ষক মহাসঙ্ঘের মুখপাত্র বীরেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন যে সরকার যদি গণনার দিন না পিছিয়ে দেয় তবে শিক্ষকদের উচিত তা বয়কট করা। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দ্বিতীয় চিঠি। প্রথম চিঠি দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ের ভোটের আগে। মৃত্যুর আসল পরিসংখ্যান ২০০-এরও বেশি হতে পারে, কারণ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান আমাদের কাছে পৌঁছায় নি। চতুর্থ পর্যায়ের ভোট বৃহস্পতিবার এবং তারপর গণনা ২ মে। যদি এই দু’টি বিষয় পিছিয়ে দেওয়া হয়, তবে অনেক জীবন বাঁচানো যাবে।’