গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ২২৬৩ জন। আর এদের মধ্যে অনেকেই অক্সিজেনের অভাবে ও আইসিইউতে বেড না পেয়ে মারা গিয়েছেন। সেই নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি এদিন বললেন, কেন্দ্রীয় সরকারকেই এতগুলো মৃত্যুর দায় নিতে হবে। তাঁর যুক্তি, করোনায় আক্রান্ত হলে রোগীর রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়। রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যেতে হয়। আর এই অক্সিজেন ও আইসিইউ বেডের অভাবেই অনেকে মারা গিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরে দেশের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল জানাচ্ছে, তাদের অক্সিজেনের স্টক ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। শুক্রবার সকালে দিল্লীর স্যার গঙ্গারাম হসপিটাল জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ‘সবচেয়ে অসুস্থ’ চারজন মারা গিয়েছেন। সকাল আটটা নাগাদ এক এসওএস পাঠিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, তাদের কাছে যে পরিমাণে অক্সিজেন আছে, তাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা চলতে পারে। ৬০ জন রোগীর অবস্থা ভীষণই উদ্বেগজনক।
গঙ্গারাম হাসপাতালের ডিরেক্টর বিবৃতি দিয়ে বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে অসুস্থ ২৫ জন মারা গিয়েছেন। আমাদের কাছে যে পরিমাণ অক্সিজেন আছে, তাতে চলবে মাত্র দু’ঘণ্টা। ভেন্টিলেটর ও তার সহযোগী আর একটি যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। আমরা আইসিইউ এবং এমার্জেন্সিতে ম্যানুয়াল ভেন্টিলেটর দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। আমাদের ৬০ জন রোগী গুরুতর অসুস্থ রয়েছেন। অবিলম্বে কেন্দ্রের এতে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।”
গত তিন দিন ধরেই অক্সিজেনের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে গঙ্গারাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গঙ্গারাম ছাড়াও আরও একাধিক হাসপাতালেও এই একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে দিল্লী সরকার হাইকোর্টে অভিযোগ করেছে, অক্সিজেন সরবরাহে কেন্দ্রের তরফে বৈষম্য করা হচ্ছে। একটি ‘বড় রাজ্যে’ অক্সিজেন পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিল্লী যদিও সেই রাজ্যের নাম করেনি। তাদের বক্তব্য, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হবে। হাইকোর্ট এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্ন করে, কোনও কারখানায় কি অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছে? বিচারপতি বিপিন সাঙ্ঘি ও বিচারপতি রেখা পাল্লিকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মন্তব্য করে, “কারখানায় পরেও অক্সিজেন পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু রোগীদের অপেক্ষা করানো যায় না। তাহলে অনেকের প্রাণ বিপন্ন হবে।”