দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন নজির গড়েছে ভারত। লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিলও। এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশ জুড়েই অক্সিজেন সংকট চরমে। যত তীব্র হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, ততই সেখানে বাড়ছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। এই অবস্থায় উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে একহাত নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে অক্সিজেনের পরিস্থিতি ঠিক কী, তাও আজ স্পষ্ট করলেন তিনি।
এই মুহূর্তে রাজ্যের হাতে ২০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্য দেখছে এই সংখ্যা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়। শুক্রবার দুর্গাপুরে ভার্চুয়াল সভা করেন মমতা। সেখানেই তিনি এই হিসাব দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের হাতে এর আগে ১৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। বৃহস্পিবার রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে তৈরি অক্সিজেনকে আমাদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। মোট ৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করেছে রাজ্য। এখন বাংলার হাতে ২০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।’
পাশাপাশি মমতা এও অভিযোগ করেন যে অক্সিজেনের এই সংকটের সময়েও রাজ্যে তৈরি হওয়া অক্সিজেন বাইরে পাঠানোর নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্র। তৃণমূল সূত্রে খবর, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার দফতর রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে তৈরি ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন রাজ্যের বাইরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। তাতেই গর্জে উঠেছেন মমতা। বলছেন, রাজ্যে যেভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে যে কোনও মুহূর্তে এই অক্সিজেন অপ্রতুল হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কেন্দ্র এই করোনার আবহে রাজ্যের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।
শুক্রবার দুর্গাপুরে ভার্চুয়াল সভাতেই এই নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এসএআইএল আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করত, কেন্দ্র তাদের উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাংলায় ওষুধ নেই, অক্সিজেন নেই। আর ওরা বাংলার অক্সিজেন অন্য রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে? বাংলার অক্সিজেন অন্য রাজ্যে যাবে কেন?’ মমতা আরও জানিয়েছেন যে তিনি এই নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন। তাতে লিখেছেন, বাংলার অক্সিজেন অন্য জায়গায় পাঠানো যাবে না।