ফের কমিশনের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখালেন হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা। শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর পর যখন উত্তাল রাজ্য, তখনই হঠাৎই চূড়ান্ত আপত্তিজনক মন্তব্য করে কমিশনের কোপে পড়েছিলেন রাহুল। তাঁর নির্বাচনী প্রচার ৭২ ঘণ্টার জন্য ‘ব্যান’ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে বারবার বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন রাহুল, অভিযোগ এমনটাই। মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তাঁর জন্য প্রচারে আসা শুভেন্দু অধিকারীর সভায় হাজির হয়েছিলেন রাহুল সিনহা। যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘আমি তো মঞ্চে উঠিনি। প্রচার করতে নিষেধ আছে, শুনতে তো নয়।’ তা নিয়ে কমিশনে অভিযোগও করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তার পরও বুধবার ফের নানা ‘কর্মসূচি’তে যোগ দিলেন তিনি।
কী কী কর্মসূচি? এদিন সকালেই ব্যাগ হাতে নিজের নির্বাচনী এলাকার একটি বাজারে হাজির হন হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী। সেখানে বাজার করার পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। এরপরই বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সেখান চাষের কাজে হাত লাগাতে লাঙল ধরে মাঠেও নেমে পড়েন তিনি। যদিও এই সব কোনওকিছুই নির্বাচনী প্রচারের অংশ নয় বলে দাবি করেছেন রাহুল সিনহা। তাঁর যুক্তি, ‘আমাকে প্রচার করতে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু বাজার করতে তো নয়। আমি বাজার করলাম। এরপর চাষিরা ডেকেছেন। তাঁরা ভাবছেন আমি ওখানে গেলে ওদের জমি পূণ্য হয়ে যাবে। সেখানেও তাই যাব। এসব কিছুই নির্বাচনের জন্য নয়’।
তবে, নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাবড়ার তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘এই তো নির্বাচনের কমিশনের নিয়ম মানা হচ্ছে! এরা আসলে আইন-শৃঙ্খলা কিছুই মানে না। এরা নাকি বাংলাকে সোনার বানাবে। ধ্বংস করে দেবে। আর রাহুল সিনহা এমনিতেও ৫০ হাজারের বেশি ভোটে হারবেন। এসব নাটক করেও কোনও লাভ হবে না।’
প্রসঙ্গত, শীতলকুচির ঘটনার পরপরই রাহুল সিনহা বলেছিলেন, ‘চারজন নয়.শীতলকুচিতে আটজনকে গুলি করে মারা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। আর আটজন কে মারা হল না, তার জন্য সিআরপিএফ-কে শোকজ করা উচিৎ। আর যাঁরা গুলি চালিয়েছে তাঁদের পদক দেওয়া উচিৎ।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে’ মন্তব্যের পর রাহুলের এহেন আস্ফালনে শোরগোল পড়ে যায়। কমিশনের কাছে অভিযোগও জমা পড়ে। এরপরই রাহুল সিনহা ৭২ ঘণ্টার জন্য প্রচারে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞার ‘ফাঁকফোকড়’ দিয়েই দিব্যি পথে রাহুল সিনহা।