উত্তর ২৪ পরগণায় ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের চিন্তা। তৃণমূল বা সিপিএম না, জনসঙ্ঘ সমর্থিত আদি বিজেপির নির্দল প্রার্থীরাই ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। গেরুয়া শিবিরে নব্য বনাম আদি’র লড়াই এখন প্রকাশ্যেই চলে এসেছে। বিক্ষুব্ধ কর্মীদের ক্ষোভের আগুন চোরাস্রোত হয়ে বয়ে চলেছে নির্দল প্রার্থীদের দিকে। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপি’র ভোট ম্যানেজাররা।
সূত্রের খবর, দলের মিটিং-মিছিলে যাওয়া বহু নেতা-কর্মীও তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে। এমনকী, তাঁদের হয়ে ভোটের নীল নকশাও সাজাচ্ছেন। আসলে সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের মনপসন্দ প্রার্থীদের হারাতে আদাজল খেয়ে নেমেছে দলের অন্দরের একাংশই। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামা বিজেপি নেতারা গদ্দার খুঁজতে গিয়ে নিজেরাই হতোদ্যম হয়ে পড়ছেন। যদিও সামনাসামনি বিজেপি নেতারা আত্মবিশ্বাসের হাসি ঝুলিয়ে বলছেন, এমন কোনও সমস্যা নয়। তবে ভেতরে ভেতরে তাঁরাও স্বীকার করছেন যে, সমস্যা আছে।
গত লোকসভা ভোটে নাগরিকত্ব ইস্যুতে বনগাঁ কেন্দ্রে বাজিমাত করেছিল বিজেপি। বহু আকাঙ্খিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর না হওয়ায় মতুয়াদের বড় অংশই বিজেপি’র উপর ক্ষিপ্ত। তার উপর প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর দলীয় কোন্দল মাত্রাছাড়া পর্যায়ের পৌঁছয়। সাংসদ শান্তনু ঠাকুর প্রভাব খাটিয়ে বিজেপি’র সঙ্গে সংস্রব না থাকা ও অস্বচ্ছ ব্যক্তিদের প্রার্থী করেছেন বলে আদি বিজেপি’র পুরনো নেতা-কর্মীদের অভিযোগ।
দলের এই বিক্ষুব্ধ অংশ সর্বভারতীয় জনসঙ্ঘের সমর্থনে গাইঘাটায় বিশিষ্ট চিকিৎসক সজল বিশ্বাস, বনগাঁ উত্তরে আদি বিজেপি নেতা অরবিন্দ বিশ্বাস, বনগাঁ দক্ষিণে অলোক গাইন, বাগদায় শিশির সরকার ও হাবড়ায় কিশোর বিশ্বাসকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। এই নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে তাঁরা প্রচারেও নেমেছেন। ভোট যত সামনে আসছে, চোরাস্রোত ততই বাড়ছে। অনেকেই দিনে বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারে গেলেও রাতে বৈঠক করছেন নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে। কেউ কেউ আবার টাকা-পয়সা দিয়েও নির্দল প্রার্থীদের সহযোগিতা করছেন।